অভিযান-১০ লঞ্চের মালিকের মুখে আগুন লাগার লোমহর্ষক বর্ণনা
লঞ্চে আগুনে হতাহতের দায় স্বীকার করেছেন মালিক হাম জালাল। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে পলাতক লঞ্চের চালক ও কর্মচারীরা। অভিযান-১০। এক বছর আগে চালু হয় লঞ্চটি। চালুর কিছু দিনের মধ্যে দুর্ঘটনায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। মেরামতের পর ফের চলাচল শুরু করে ঢাকা-বরগুনা রুটে। দুর্ঘটনার শিকার লঞ্চের মালিক হামজা লাল। আগুনের ঘটনার আদ্যপান্ত নিয়ে কথা বলেছেন।
অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হাম জালাল বলেন, বরিশাল থেকে যাত্রী নামিয়ে ঝালকাঠি পার হওয়ার ১০-১৫ মিনিট পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানানো হয়নি। আমাকে দুর্ঘটনার বিষয়টি লঞ্চ মাস্টার জানায়নি, আমাকে এক কেরানি জানিয়েছে। সে কান্নাকাটি করছিল। আমি বললাম কান্নাকাটি করছ কেন? কি হয়েছে? সে বলল স্যার জাহাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম জাহাজটার আগুন কিভাবে বন্ধ করা যায় তার ব্যবস্থা কর। আমাকে বললো ইঞ্জিনের মাস্টার সাইডের পেছন সাইডে আগুন ধরে গেছে। জাহাজ জ্বইলা যাইবো গা অহনই জ্বইলা যাইবো গা।
কতজন যাত্রী ছিল প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ঢাকা থেকে উঠেছে ৩২৫ থেকে ৩৩০ জনের মতো, আর চাঁদপুর থেকে উঠছে ১০০’র উপরে। সবমিলে ৪০০’র বেশি যাত্রী ছিল।
আপনার জাহাজে পর্যান্ত পরিমাণে ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না কেন? এ বিষয়ে জাহাজ মালিকে বক্তব্য, আপনি যা বলছেন আমার মনে হয় সুষ্ঠু তথ্য পাননি। কেননা আমার জাহাজের ভেতর ২১টি ফায়ার ফাইটিং থাকার কথা (যেটা দিয়ে আগুন বন্ধ করে) সেটা ২১ জায়গাতেই ছিল এক জায়গায় না।
এই আগুন কোথা থেকে লাগতে পারে এবং তা ব্যাপক আকার ধারণ করার কারণ কী? এ ব্যাপারে হামজা লাল বলেন, আমি মনে করি এটা একটা নাশকতা। কেননা ইঞ্জিন রুমে বাস্ট হলে শুধু ইঞ্জিন রুমেই তা সীমাবদ্ধ থাকবে। ওখান থেকে বের হতে কম করে হলেও দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগবে। এটা কোনও কেবিনে যাবে না। এজন্য আমার কাছে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্র। আমার পেছনে যারা লেগেছে তারা মনে করেছে যে, এই কোম্পানিকে ধ্বংস করতে পারলে আমরা হয়তো বা নিরিবিলি থাকতে পারবো। এমন একটা কিছু।
ইন্সুরেন্স করা ছিল আপনার? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি না থাকার কথা স্বীকার করে নেন।
একটা জাহাজ নামাতে গেলে ফায়ার সিকিউরিটি, ইন্সুরেন্স এই সব বিষয়গুলো থাকতে হয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিযান-১০ এর মালিক বলেন, আপনি ঘাটলে এ সকল কাগজপত্র পাবেন। শুধু ইন্সুরেন্সটা পাবেন না।
কেন? তখন তিনি বলেন, ইন্সুরেন্সটা আমরা কেউই করি না। শুধু আমি কেন কোনও একটা জায়গায় বলেন যে, ভাই দেখি আপনার ইন্সুরেন্সটা দেখান তো। আমার মনে হয় কেউ দিতে পারবে না।
আপনার লঞ্চে বসে এই যে মানুষগুলো মারা গেলো আপনি কি এর দায় এড়াতে পারেন? হামজা লাল বলেন, আমি এক কথায় বললে বলবো দায় এড়াতে পারবো না। যেহেতু আমার দরজায় এসে এগুলো হয়েছে তাই আমি এটার দায় এড়াতে পারি না।
ঘটনার পর থেকেই লঞ্চ চালক ও কর্মচারীরা পলাতক আছে বলেও জানান অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক। দুর্ঘটনার দায় নিয়ে যে কোন আইনি পদক্ষেপের জন্যও তিনি প্রস্তুত আছে বলে জানান। সূত্র: চ্যানেল 24
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত