কৃষকের ১০ হাজার তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলেছেন পাউবো প্রকৌশলী
ইমরান হোসেন,পটুয়াখালী থেকেঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দেলোয়ার হোসেন নামের এক কৃষকের ১০ হাজার তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৬ জানুয়ারি) শেষ বিকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেড়িবাঁধ রক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম এ কান্ড ঘটিয়েছেন। এতে সর্বসান্ত হয়ে পরেছেন ওই কৃষক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বনবিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে বিগত কয়েক বছর যাবৎ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঢালে বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছে দেলোয়ার। গত ২ মাস আগে ওই স্থানে তরমুজের চাষ শুরু করে। তরমুজের চারা রোপনের পর থেকে ওই কর্মকর্তারা প্রতিদিন এখানে আসতো এবং গাছগুলো দেখতো। কিন্তু গতকাল হঠাৎ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মনিরুল ইসলাম এসে তার প্রায় ১০ হাজার গাছ উপড়ে ফেলে। এতে তার প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
কাঁদো কাঁদো কৃষক দেলোয়ার জানান, এখানে দায়িত্বে থাকা বনবিভাগের মোশাররফ নামের অফিসারকে ১০ হাজার টাকাও দিয়েছি। কিন্তু আজকে হঠাৎ মনিরুল ইসলাম স্যার এসে আমার প্রায় ১০ হাজার গাছ উপড়ে ফেলে। আমি অনেক কান্নাকাটি করেছি, তার হাত-পা ধরেছি কিন্তু শোনেনি। আমাকে ১টি মাস সময় দিলে আমার এই সর্বনাশটা হতো না। বর্তমানে আমাকে মামলার হুমকি দিচ্ছে।
দেলোয়ারের স্ত্রী সালমা বেগম জানান, আমার স্বামীর সাথে আমি এই জায়গায় কাজ করছি, আটি রোপণ করেছি। টাকা নেই তাই আমি তিনটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছি, এখন এই টাকা কি দিয়ে দিবো। আমি এই ক্ষতিপূরণ চাই, না হয় আমার মরন ছাড়া উপায় নেই।
প্রতিবেশী নাসির মৃর্ধা জানান, আমরা গ্রামবাসী সবাই নিষেধ করেছি যে অন্তত ১টি মাস সময় দেয়া হোক। তারপর আপনাদের যদি কোনো ক্ষতি হয় ওই ছেলেটা আপনাদের ক্ষতিপূরন দিবে। কিন্তু তাঁরা কারো কথা শোনেননি। সব গাছগুলোতে ফল আসছে সব উঠাইয়া ফালাইছে।
টাকা নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা গঙ্গামতি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ জানান, আমি কোনো টাকা পয়সা নেইনি, এগুলো সব মিথ্যা। তাঁরে নিষেধ করার পরও সে গাছ লাগাইছে। ওখানে ঘাষ নষ্ট হওয়ার কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী গাছ উঠাইছে, আমি উঠাইনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন বেড়িবাঁধ রক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, ওখানে তরমুজ গাছ লাগিয়েছে আমি আগে দেখিনি আজকে দেখলাম, আর আমাদের বেরিবাঁধ রক্ষায় লাগানো ঘাষ কেটে উঠিয়ে ফেলার কারনে কিছু জায়গা রেখে বাকি তরমুজ গাছ আমি উঠিয়ে ফেলেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন জানান, ওই স্থানে এখন প্রকল্প আওতাধীন কাজ হচ্ছে। আমরা নিজেরা আর কিছু দিন পর কাজ শুরু করবো। তবে এই ব্যাপারে আমি এখনো শুনিনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, বিষয়টি আমি মাত্রই শুনলাম যদি লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবো।
পটুয়াখালীর বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন এর মুঠোফোনে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
এবিসয় পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডে তত্ত্বাবধায়ক মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, ওই বেড়িবাঁধর কাজ চায়না প্রোজেক্ট আওতায় চলমান আছে। তবুও আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখাছি।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত