সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে রডের দাম
ভবন নির্মাণের অন্যতম প্রধান সামগ্রী রডের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি টনে দাম বেড়েছে পাঁচ হাজার টাকার বেশি। শনিবার রাজধানীর কয়েকটি রডের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি টন রড ৮২ থেকে ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সপ্তাহ দুয়েক আগেও ছিল ৭৭ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। এর কারণ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাঁচামালের সরবরাহ সংকটকে দায়ী করছেন উৎপাদনকারীরা। তবে খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতারা বলছেন, ওই যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই দাম বাড়ানো হচ্ছে।
তেজতুরীবাজার এলাকার রড-সিমেন্টের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মুজাহিদ ট্রেডার্সের মালিক বলেন, গত ১০ থেকে ১২ দিন ধরেই বাড়ছে রডের দাম। কোম্পানির প্রতিনিধিরা প্রায় প্রতিদিনই নতুন দর জানিয়ে দিচ্ছেন। এ অবস্থায় বেশি রড কিনছেন না তারা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের খান ট্রেডার্সের মালিক উজ্জ্বল খান সমকালকে বলেন, গত দুই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চট্টগ্রামে উৎপাদিত রডের দাম। কারণ ভালো মানের রড বেশি উৎপাদন হয় সেখানে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে বর্তমানে তিন ধরনের এমএস রড পাওয়া যায়। এর মধ্যে অটো কারখানাগুলোতে তৈরি ৭৫ গ্রেড (৫০০ টিএমটি) রড সবচেয়ে ভালো মানের রড। প্রতি টনে এই মানের রডের দাম বেড়েছে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। এ ছাড়া রয়েছে সেমি অটো কারখানাগুলোতে তৈরি ৬০ গ্রেড (৫০০ ওয়াট) এবং সাধারণ বা ৪০ গ্রেডের রড।
এক দশক আগে প্রায় এক লাখ টাকা ছুঁয়েছিল টনপ্রতি রডের দাম। এরপর দাম কমে প্রায় অর্ধেকে নামে। বছর দেড়েক আগেও রডের টন ছিল প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু কয়েক দফায় বেড়ে এখন ভালো মানের প্রতি টন রড খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে বিএসআরএম, কেএসআরএম ও জিপিএইচসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি টন ৭৫ গ্রেডের রড বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৪ হাজার টাকায়, যা সপ্তাহ দুয়েক আগে ছিল ৭৬ থেকে ৭৯ হাজার টাকা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সেমি অটো মিলের ৬০ গ্রেডের (৫০০ ওয়াট) রডের দাম ৬৮ থেকে ৬৯ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৩ থেকে ৭৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া সাধারণ ৪০ গ্রেডের রডের দাম বেড়েছে প্রতি টনে প্রায় সাত হাজার টাকা। ৬৬ থেকে ৬৭ হাজার টাকার রড এখন কিনতে লাগবে ৭১ থেকে ৭২ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে পিএইচপি ইস্পাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববাজারে রড উৎপাদানের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। নির্ধারিত সময়ে চাহিদা অনুয়ায়ী কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া ইউক্রেনে যুদ্ধ লাগার কারণে আগে যেখানে এক-দেড় মাসে জাহাজ আসত এখন তা ছয় মাসে আসতে পারবে কিনা, তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। এসব কারণে কারখানায় উৎপাদনের যে সক্ষমতা রয়েছে সে অনুযায়ী উৎপাদন করা যাচ্ছে না। তা ছাড়া জাহাজ ভাড়াও বেড়েছে। এসব কারণে রডের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। ফলে রডের বাজারে প্রভাব পড়েছে।
তবে মিরপুরের একতা বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শরীফ বলেন, গত এক-দেড় বছর ধরেই রড-সিমেন্টের দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই রডের দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত