শেখ হাসিনা, সব নারীর প্রেরণা
৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালন করা হয়।
প্রথম ১৯০৯ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। ওই বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আমেরিকায় নারী দিবস উদযাপন করা হয়েছিল। সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা নিউ ইয়র্কে ১৯০৮ সালে বস্ত্রশ্রমিকরা তাদের কাজের সম্মান আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ আর সমমানের বেতনের দাবিতে চলে হরতাল।
১৯১০ সালে কোপেনহেগেনের উদ্যোগের পর, ১৯ মার্চ অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইৎজারল্যান্ডে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক নারী দিবস চিহ্নিত হয়েছিল। নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের বৈষম্যের অবসানের জন্য প্রতিবাদ করেন লক্ষ মানুষ। একইসঙ্গে রাশিয়ান নারীরাও প্রথমবার ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘রুটি ও শান্তি’র দাবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরোধিতা করেন। ইউরোপের নারীরা ৮ মার্চ শান্তি বিষয়ক কার্যক্রমকে সমর্থন করে বিশাল মিছিলে নামেন। ১৯১৩-১৯১৪ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিবাদ জানানোর একটি প্রক্রিয়া হয়ে ওঠে।
আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসঙ্ঘ ১৯৭৫ সালের ৮ মার্চ দিনটিকে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৭ সালে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ সদস্য রাষ্ট্রদের নারী অধিকার ও বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য জাতিসঙ্ঘ দিবস হিসেবে ৮ মার্চকে ঘোষণা করার আহ্বান জানায়।
গুরুত্ব
বিশ্বজুড়ে লিঙ্গ সাম্যের উদ্দেশ্যে কাজের জন্য এই বিশেষ দিনটি পালন করা হয়।
আজকের আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিশেষ এ লেখাটি মাধ্যমে বলতে চাই বাংলাদেশ তথা বিশ্ব পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অতুলনীয় রোল মডেল মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনাকে একজন নারী হিসেবে গণ্য করে আলাদাভাবে তার কর্মের মূল্যায়ন করা হয়তো সঠিক হবে না। তার নেতৃত্বের গুণাবলীর কারণে তিনি আজ অনন্য, অদ্বিতীয়।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তার সাথে দোয়া করি আল্লাহতাআলা আপনাকে দীর্ঘজীবী করুক। আপনার নেতৃত্বে এই দেশ আরো এগিয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
শেখ হাসিনা ‘নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন, পিতার প্রতি ভালোবাসা বা মমত্ববোধের বিরল নিদর্শনই রেখে যাননি, পিতার স্বপ্ন own করেছেন।’ কারণ পৃথিবীর প্রায় সব সন্তানের কাছেই তার পিতা শ্রেষ্ঠ পিতা। পিতার জন্য কিছু করতে পারা বা পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারা বিরাট এক সৌভাগ্যের বিষয়। কিন্তু শেখ হাসিনার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ, তার পিতা নিজের জীবন যৌবনের সাড়ে চৌদ্দ বছর অন্ধকার কারা প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন দেশের জন্য, স্বাধীনতার জন্য। সেই সময়গুলো পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি এমন এক পিতার কন্যা যখন তার জন্ম হয়েছে তখন তার পিতা জেলে, যখন তার বিয়ে হয়েছে তখন তার পিতা জেলে, যখন তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়েছে তখনো তার পিতা পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী অবস্থায় মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। শেখ হাসিনা এমন এক পিতার সন্তান যখন সেই পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তখনো কন্যা হিসেবে, সন্তান হিসেবে শহীদ বাবার মুখটাও শেষবারের মতো দেখতে পারেননি। পৃথিবীতে এমন ঘটনার উদাহরণ আর একটিও আছে কিনা জানা নেই।বঙ্গবন্ধুর তার স্বপ্নের সফল বাস্তনায়ন করে যাচ্ছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। দেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশ আজ সমৃদ্ধ। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে অনেক আগে। সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ফলে দেশ প্রায় শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় চলে এসেছে। দেশের বড় দুটি সেতু শেখ হাসিনার হাতেই নির্মিত। পদ্মা সেতু তো নিজেদের অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, মেট্রোরেল, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তব। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নারী, বয়স্ক, গরিব, প্রতিবন্ধী অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য বিভিন্ন ভাতা চালু ও দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক নেত্রী হিসেবে বিশ্বে শেখ হাসিনার নাম সর্বাগ্রে। বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সময়মতো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ ও সর্বাগ্রে দেশের মানুষের জন্য কার্যকরী টিকার ব্যবস্থা করে দেয়ায় বিশ্ববাসীর মতো দেশের মানুষও একবাক্যে শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আর এসবের যারা প্রশংসা করতে পারছে না তারা হীনমন্য, হতভাগা।
শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্বে নারী হিসেবে ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথের পরে সবচেয়ে অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং একই সাথে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সরকার প্রধান। একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতা হিসেবে চার দশকের পথচলার পাশাপাশি দেশ পরিচালনায় দেড় দশক অতিক্রম করে দুই দশকের পথে সফল যাত্রায় বিশেষ করে নারী অধিকার রক্ষায় ও নারী উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তার সফল ও গতিশীল নেতৃত্বে। এটা অবশ্যই বিশ্বের নারী সমাজের জন্য অনন্য সাধারণ ঘটনা। সারা পৃথিবীতে নারী অধিকার রক্ষায় ও সব ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনা নিঃসন্দেহে সব নারীর অনুপ্রেরণা। মা হিসেবেও গর্ব করার মতো একজন মা, যার দুই সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে সুসন্তান রূপে গড়ে তুলেছেন, যাদের কিনা ক্ষমতা ও বিত্তবৈভব স্পর্শ করতে পারেনি। তারা নিজেরা স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত