ওই তরুণী ৬ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন

| আপডেট :  ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০২:২৪  | প্রকাশিত :  ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০২:২৪

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই বিভিন্ন ঘটনা, ভিডিও ভাইরাল হয়। কিছু কিছু ঘটনা ভালো বার্তা ছড়ালেও কখনো কখনো আপত্তিকর বা বিতর্কিত কন্টেন্টও ভাইরাল হয়। যেমন সম্প্রতি একটি ঘটনা বেশ আলোড়ন ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক তরুণীকে সারপ্রাইজ দিতে চাইছেন তার এক বন্ধু। এসময় তরুণীর দুই চোখ হাত দিয়ে বন্ধ করে রাখেন তিনি। অত:পর চোখ খুলে দেন, দেখা যায় ধীরে ধীরে রেস্তোরাঁয় একে একে পাঁচ তরুণ প্রবেশ করেন। এরপর ওই তরুণীকে ছয় যুবক নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। এসবের মধ্যে অন্যতম অভিযোগ, মেয়েটি নাকি একই সঙ্গে ছয় ছেলের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে গেছেন।

একটি তরুনের ফেসবুক আইডি থেকে ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও একসময়ে ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকজুড়ে। যেখানে দেখা গেছে, মিরপুরের ওই রেস্তোরাঁয় ছয় যুবক মিলে তরুণীর কাছে নানা প্রশ্নের জবাব চাইছেন। একসময় তরুণী হাত থেকে একটি বস্তু ছুড়ে মারেন। একসময় কান্নাও করে ফেলেন।

রোমান হক নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েকটি ভিডিও ও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে একজন বলছেন, মেয়েটির সঙ্গে সম্পর্কে এমনভাবে জড়িয়েছিলেন যে তিনি সাইকো হয়ে গিয়েছিলেন। মেয়েটিকে তিনি অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন। তার স্বজন বন্ধুবান্ধবরাও ওই মেয়ের কাছ থেকে দূরে থাকতে বলতেন, তিনি শুনতেন না। দামি উপহারসামগ্রী মেয়েকে তিনি দিতেন। একটা সময় তিনি তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন, মেয়েটি ছয়টি প্রেম করছে একই সঙ্গে। এরপর সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিরপুরের ওই রেস্তোরাঁয় ডেকে আনেন। যুবকের দাবি, সকলেই তার প্রেমিক।

মেয়েটির অপরাধ এবং তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল প্রতিক্রিয়া হয়েছে। দিনভর এই ঘটনায় ট্রল, সমালোচনা, মিম চালানো হয়েছে। মেয়েটির ভিডিও ডাউনলোড করে আপলোড করা হয়েছে শত শত পেইজে ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। ইউটিউব ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. নাজমুল হক একটি সংবাদমাধ্যমকে বলছেন, ‘মেয়েটির অপরাধ থাকলেও আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারবে না। তিনি মনে করেন, অনলাইন হ্যারাজমেন্ট মোটেও কাম্য নয়। তিনি বলেন, ‘যারা এই ভিডিও বা ছবি ছড়িয়েছে সেটা সাইবার অপরাধ। ওই মেয়ের ইথিক্যাল সমস্যা থাকলে সেটার সমাধান মোটেই অনলাইন হ্যারাজমেন্ট নয়। হয়তো ওই মেয়ের কাউন্সেলিং দরকার, তবে অন্যদের এভাবে হ্যারাজ করার অধিকার নাই, আইন তো নিজের হাতে তুলে নেওয়া যায় না!’

নাজমুল হক বলছেন, ‘নয় বা ছয়, সংখ্যা যেটাই হোক, এটার জন্য আপনি কম্পিটেন্ট অথরিটির কাছে কতখানি ইথিক্যাল বিচ্যুতির বা প্রতারণার অভিযোগ তুলবেন সেটা আপনার অধিকার এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রচলিত আইন মোতাবেক সুবিচার পাবেন সেটাও অধিকার। তবে এটা আপনার অনধিকার ও অপরাধ যে আপনি তাকে পাবলিকলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যারাজ করবেন। বলা বাহুল্য, ওই মেয়ের এখন এটা অধিকার হলো যে সে আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে জাজমেন্টাল হলে বিপদ প্রত্যাসন্ন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত