বাকেরগঞ্জ যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন, স্বামী ও শ্বশুর সহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা

| আপডেট :  ১৯ জুন ২০২২, ০৬:৪৫  | প্রকাশিত :  ১৯ জুন ২০২২, ০৬:৪৫

এস এম নওরোজ হীরা: বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে উপজেলার ৭ নং কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামের বাসিন্দা অসহায় মোঃ আনোয়ার মুন্সির কন্যা মোসা সুবাই বেগমের ,সাথে ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক, পাঁচ লক্ষ টাকা কাবিন রেজিস্ট্রি মূল্য গত ২৪/৯/২০০৯ ইং সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়, একই উপজেলার ১০নং গারুড়িয়া ইউনিয়নের ভান্ডারীকাঠী গ্রামের জলিল মৃধার পুত্র রাসেল মৃধার।

যৌতুকলোভী প্রতারক স্বামী রাসেল মৃধার পরিবারের তিনজনকে আসামি করে বরিশালের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩)এর১১(গ) /৩০ধারা মামলা দায়ের করেন রাসেলের স্ত্রী। যাহার মামলা নং ১৯২/২০২২

মামলা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে পরিবারের সন্মতিতে ইসলামি বিধান মেনে কবিনামা রেজিস্ট্রার কর সহ প্রায় পাঁচ লাখের বেশিরভাগ টাকার মালামাল ও স্বর্ণালকার সহ পিতা জলিল মৃধার যৌতুকলোভী প্রতারক স্বামী রাসেল মৃধার হাতে তাকে তুলে দেন।

বিবাহের পর বছর দুই বেশ ভালো ভাবে কাটে তাঁদের ঘড় সংসার , সুবাই ও রাসেল দম্পতির তিন টি সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই রাসেল নারীতে আসক্ত হয়, বিবাহিত তানিয়া নামে একটি মেয়েকে দ্বিতীয় বিবাহ করে। দ্বিতীয় বিবাহ করা তানিয়ার আগের স্বামী চাপ সৃষ্টি করিলে ও সুবাই কাগজের বিরোধিতা করায় বাদী সুবাইর উপর ক্ষিপ্ত হইয়া ৫/৩/২০২২ বাদীকে স্বামীর ঘরে বসিয়া বাবার বাড়ি থেকে জমি বিক্রয় করে যৌতুক বাবদ পাঁচ লক্ষ টাকা আনিয়ে দিতে বলে দ্বিতীয় স্ত্রী কে তালাক দিবে ও ব্যবসা করিবে বলিয়া জানায়। বাদী সুবাই রাজি না হলে, স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ি মোসা মাহামুদা বেগম সহ সুবাইকে মারধর করে ,তাহার সকল স্বর্ণালঙ্কার রাখিয়া এক কাপড়ে তিন বাচ্চা সহ বাবার বাড়িতে তারাইয়া দেয়।

কিন্তু বেশ কিছু দিন সে বাবার বাড়িতে থাকলেও কোনো খোঁজ খবর নেয়নি স্বামী রাসেল। সুবাইর ভাই রাসেলের পরিবারের লোকজন নিয়ে আপশ মীমাংসার জন্য বলে তাদের বাড়িতে আসতে , রাসেল ও তার পরিবারের লোকজন আসিলে তাদের আপ্যায়ন শেষে আপোষ মীমাংসা শালিস বিচারের জন্য বসে, কিন্তু রাসেলের একটাই দাবি পাঁচ লক্ষ টাকা তাকে যৌতুক দিতে হবে ,অন্যথায় অন্য জায়গায় সে বিবাহ করিতে বাধ্য হবে। এই কথা শুনিয়া সুবাই প্রতিবাদ করিলে তাকে কিল-ঘুসি লাথি ফুলা জখম করিয়া সুবাইদের বাড়ি হইতে চলিয়া যায়। সুবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

এদিকে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী বশির আহমেদ সবুজ বলেন, মঙ্গলবার বরিশাল বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে নেয় বিচারের স্বার্থে আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ড বিধির ধারা মোতাবেক ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে । উক্ত মামলাটি আদালত বাকেরগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী জানান, আমার সাথে বিবাদীদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিবাহে বাধা প্রদান করিলে ও যৌতুকের দাবী কৃত টাকা না দেয়ায় এবং যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনকে কেন্দ্র করে বিরোধ হয়, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করেন কিন্তু,

বিবাদীরা কোনো আইন কানুন শালিস বিচার মানেন না, তাহারা আমার কাছ থেকে যৌতুকের টাকা দাবি করে, না দিলে আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেবে না, অন্যথায় আবার বিবাহ করিবে বলে আসছে তাই তাহাদের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার পেতে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত