পটুয়াখালী-ঢাকা লঞ্চে ভাড়া বেড়েছে, ক্ষুব্ধ যাত্রীরা

| আপডেট :  ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৯:২৫  | প্রকাশিত :  ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৯:২৫

পটুয়াখালী-ঢাকা নৌ রুটে বেড়েছে লঞ্চ ভাড়া। জ্বালানির তেলের দাম বাড়ানোর দুদিন না যেতেই যাত্রীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়তি ভাড়া। এই নৌ রুটে চলাচলকারী লঞ্চের প্রথম শ্রেণির ডবল ও সিঙ্গেল কেবিনপ্রতি ২০০ টাকা করে এবং ডেকের ১০০ টাকা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

সোমবার (৮ আগস্ট) থেকে এ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিভিন্ন লঞ্চের পটুয়াখালীর বুকিং ইনচার্জরা।

স্থানীয় লঞ্চঘাট সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী-ঢাকা ডবল কেবিন ৮ দশমিক ৭০ ভাগ বাড়িয়ে ২ হাজার ৩০০ টাকার স্থলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১৮ দশমিক ১৮ ভাগ বাড়িয়ে ১ হাজার ১০০ টাকার স্থলে ১ হাজার ৩০০ টাকা এবং ডেকের ভাড়া ৩৩ ভাগ বাড়িয়ে ৩০০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকা করা হয়েছে।

এদিকে লঞ্চের যাত্রীসংখ্যাও ছিল তুলনামূলক অনেক কম। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে লঞ্চের সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। চারটি লঞ্চের স্থলে এখন দুটি লঞ্চ চলাচল করছে।

সোমবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পটুয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে দুটি লঞ্চ। এ লঞ্চ দুটি ছিল এমভি সুন্দরবন-৯ ও এমভি কুয়াকাটা-১।

এমভি কুয়াকাটা লঞ্চের ঢাকাগামী প্রথম শ্রেণির কেবিন যাত্রী মরিয়ম বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের মানুষের সঙ্গে এ কেমন খেলা শুরু করছে। ঢাকা দিয়া সিঙ্গেল কেবিনে আসলাম ১০০০ টাকায়, এখন যেতে হচ্ছে ১৩০০ টাকায়। সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে দেরি করলেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষ লঞ্চের ভাড়া বাড়াতে দেরি করেনি একটুও। জানি না আর কত বাড়াতে পারে ভাড়া।

এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চের ডেকের যাত্রী সেরাজ মিয়া বলেন, লঞ্চ স্টাফরা যাত্রীদের ওপর জুলুম করছে এবং যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলেছে। তারা যখন ইচ্ছে ভাড়া কমাবে, আবার যখন ইচ্ছে ভাড়া বাড়াবে। আমাদের মতো আম যাত্রীরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখমু। এই হচ্ছে আমাদের দেশের অবস্থা, কাকে কী বলব? জনগণের সমস্যার কথা কেউ ভাবছে না। দেশের মানুষ কোথায় যাবে, দিন দিন ভাড়া বেড়েই চলেছে।

এমভি কাজল-৭ লঞ্চের পটুয়াখালীর বুকিং ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, সরকার-নির্ধারিত ডেকের ভাড়া ৫৭৮ টাকার স্থলে নেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা। বর্তমানে যে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে তার দ্বিগুণ ভাড়া রয়েছে সরকার-নির্ধারিত তালিকায়। সে হিসাবে লঞ্চের ভাড়া এখনো বাড়ানো হয়নি। যাত্রীদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত সরকারের দেওয়া নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।

পটুয়াখালী নদীবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. মামুন-উর রশিদ বলেন, লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বর্তমানে যে ভাড়া নিচ্ছে, তা সরকার-নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক কম। এ কারণে ভাড়া বাড়ালেও লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে কিছু বলা হয় না।

উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় লঞ্চে যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে যায়। ফলে এ রুটে চলাচলকারী সব কটি লঞ্চের ভাড়া কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম শ্রেণির ডবল কেবিনে ৬০০ টাকা কমিয়ে ২ হাজার ২০০ টাকা এবং সিঙ্গেল কেবিনে ৩০০ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা ধার্য করে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় গতকাল সোমবার (৮ আগস্ট) থেকে ফের ভাড়া বাড়িয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লঞ্চের যাত্রীরা।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত