চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘টাইফুন হিনামনো ‘,আছড়ে পড়তে পারে কোরিয়ায়
দক্ষিণ কোরিয়ায় টাইফুন হিনামনোর আঘাত হানতে যাচ্ছে মঙ্গলবার। বিগত এক দশকে এমন শক্তিশালী টাইফুন দক্ষিণ কোরিয়াতে আর আসেনি। এজন্য দেশটির স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। ফ্লাইট স্থগিত এবং কিছু ব্যবসা কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড়কে দক্ষিণ কোরিয়ায় আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ঝড় মনে করা হচ্ছে। এতে প্রচুর ভূমিধস হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত জেজুদো দ্বীপে এর প্রভাব শুরু হলেও ঝড়ে সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ পূর্ব উপকূলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বুসান এলাকা আক্রান্ত হবে বলে ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে দক্ষিণ উপকূলে ভারি বৃষ্টি শুরু হওয়ার মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানবে মঙ্গলবার। দক্ষিণ কোরিয়ায় টাইফুনকে চারভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো- স্বাভাবিক নরমাল, শক্তিশালী স্ট্রং, খুবই শক্তিশালী ভেরি স্ট্রং এবং অত্যধিক শক্তিশালী সুপারস্ট্রং। আসন্ন টাইফুনকে খুবই শক্তিশালী ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় শতাধিক ফ্লাইট গ্রাউন্ডেড এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। টাইফন হিনামনোর প্রতি ঘন্টায় ২৯০ কিলোমিটার বেগে ভারি বৃষ্টিপাত এবং বাতাসসহ দক্ষিণ অঞ্চলের কাছে পৌঁছেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া সংস্থা বলেছে দেশটি এই বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী বৈশ্বিক ঝড় হিনামনোরের শক্তি অনুভব করতে শুরু করবে।
মঙ্গলবারের প্রথম দিকে এটি মূল ভূখণ্ডের শহর বুসানের কাছে ল্যান্ডফল করার আগে জেজুদোর দক্ষিণ রিসোর্ট দ্বীপ চরে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।জেজুদো দ্বীপ অতিক্রম করার মাধ্যমে টাইফুনটি মঙ্গলবার সকালে বুসান, উলসান, ছাংউওন, খিমহে, থোংইয়ং সিটি অতিক্রম করবে।
রাষ্ট্রপতি ইউন সুক ইওল বলেন, তিনি টাইফুন নিরীক্ষণ এর জন্য তার অফিসে সারারাত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী হান্ দুক-সু বন্যার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সক্রিয় প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন হিনামনোরের চেয়ে বেশি শক্তিশালী বাতাস বয়ে আনা ২০০৩ সালে টাইফুন মায়েমিয়ায় ১১৭ জন মারা গিয়েছিল এবং ১৯৯৪ সালে রেকর্ড রাখা শুরুর পর থেকে দেশে স্থলভাগের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় ছিল সেটি।
দক্ষিণ কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ৩৬০টিরও বেশি ফ্লাইট এবং ৬৪টি ফেরি পরিষেবা দেশব্যাপী গ্রাউন্ডেড ছিল এবং হাজার হাজার মাছ ধরার নৌকা বন্দরে ফিরে এসেছে।
সিউলের কিন্ডারগার্ডেন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বুসান ও তার নিকটবর্তী দক্ষিণ অঞ্চলের সমস্ত স্কুল মঙ্গলবার বন্ধ বা অনলাইন ক্লাসে স্থানান্তরিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত সব বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিরাপদ অবস্থানে থাকার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস এবং প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিগুলোর পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত