ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে সর্বশান্ত মুরাদিয়ার চাষী কাজেম আলী
দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আমাকে সর্বশান্ত করেছে। আমার ফলের বাগান, পেঁপে, শাক-সবজি, পুকুরের মাছ সবকিছুই কেঁড়ে নিয়েছে। প্রায় ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আমি দিশেহারা।
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার উত্তর মুরাদিয়া গ্রামের কাজেম আলী ২’একর অন্যের জমি ১০বছর মেয়াদি লিজ নিয়ে, শুরু করেছিল উচ্চ ফলনশীল জাতের মাল্টা, কূল, পেয়ারা, কমলা ও লেবুর চাষ।
ফলজ বাগানের ফাঁকে চাষ করে ছিলেন, দেশী-বিদেশী জাতের পেঁপে, লাউ, বরবটি, লালশাক, পালংশাক বাঁধাকপি ফুলকপি, ধনিয়া ও বেগুন। ৩টি বড় পুকুর খনন করে দেয় লক্ষাধিক দেশি জাতের শিং,গুলিশা, টেংরা ও সাদা কার্প জাতীয় মাছ চাষ করেছিলেন। ১০থেকে১২ লক্ষাধিক টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে গড়ে তুলেছিলেন এসকল খামার। বাগান ও পুকুর থেকে ইতিমধ্যে আয়ের মুখ দেখা শুরু করেছিল কাজেম আলী। প্রতিমাসে গড়ে ২২থেকে ২৫ হাজার টাকা পেঁপে ও সবজি বিক্রি করত। কিন্তু গত সপ্তাহের ঘুর্নিঝড় সিত্রাংয়ের তান্ডবে তার পুকুরের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মাছ ও ২লক্ষ টাকার মাল্টা, কুল ও পেঁপে সহ বিভিন্ন রকমের সাক- সবজি পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কাজেম আলী মৃধা বলেন, আমি পূর্বে চট্টগ্রামে গার্মেন্টসের ব্যবসা করতাম, করোনাকালীন সময় লোকসান দিয়ে এলাকায় এসে ডিলারি ব্যবসায়ও লোকসান দিয়ে যা পূঁজি ছিল তা দিয়ে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ও সহযোগিতায় খামারটি তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলাম। এখন আমি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।
এ ব্যাপারে জমির প্রকৃত মালিক মহিবুল্লাহ মেহেদী বলেন, তিনি আমার কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে মাল্টা, কুল, পেয়ারা, পেঁপেসহ নানা ফলফলাদি ও মাছ চাষ করেছিলেন, এ রকম উদ্যোগে আমরাও খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে তার প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারি কোন সংস্থা বা এনজিও থেকে সাহায্য অথবা ঋণ প্রয়োজন।
উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার হাওলাদার ও তানিয়া আক্তার বলেন, কাজেম আলী মৃধার ফলের বাগান ও মাছের ঘের তলিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমরা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তদারকি, পরামর্শ, সহযোগিতা করছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত