সোনারগাঁয়ে ছুটির দিনে লোক ও কারুশিল্প মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল

| আপডেট :  ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৯  | প্রকাশিত :  ২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৯

আল আমিন কবির, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: ছুটির দিনে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে সোনারগাঁয়ের লোক ও কারুশিল্প মেলায়। প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বিশাল চত্বর জুড়ে বসেছে এ মেলা। মেলায় বিলুপ্ত প্রায় বায়োস্কোপ অন্যতম বিনোদন।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে আগত দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। যেন উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ও এর আশপাশের এলাকা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন আয়োজিত এবারের মেলায় গ্রামের প্রতি চিরন্তন নাড়ির টান আর ভালবাসার আকর্ষণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলবদ্ধভাবে ভিড় করছেন এ মেলায়।

এ এক অন্য রকম সুবাসিত অনুভূতির পরশ মাখা আনন্দময় পরিবেশ যেন মেলা প্রাঙ্গণ। শিক্ষা সফর, বনভোজন, আনন্দ ভ্রমণ, ঘুরে আসি, পিকনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ব্যানারে দল বেঁধে হাজার হাজার মানুষ আসছে এখানে। মেলা প্রাঙ্গণে বিদেশীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পরার মতো। এক কথায় সোনারগাঁয়ে লোক কারুশিল্প মেলা প্রাঙ্গন এখন পুরোপুরি মুখরিত।

আবহমান বাংলার হাজার বছরের প্রাচীন লোকজ ঐতিহ্যকে লালন, পরিস্ফুটন এবং চলমান জীবনধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে গত ১৮ জানুয়ারী থেকে মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। মেলা চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলা উপলক্ষে পুরো ফাউন্ডেশন চত্বর এক ভিন্ন সাজে সাজানো হয়েছে।

লাল নীল বাতি দিয়ে মালার মতো করে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জাদুঘরের ভবনগুলোর ইটের তৈরি দেহে। ফাউন্ডেশনের মূল আঙ্গিনা থেকে মেলার দিকে ধাবিত রঙিন পতাকায় শোভিত রাস্তার ধারে বিভিন্ন গ্রামীণ শ্লোক, নীতিকথা সংবলিত প্লাকার্ড, ফেস্টুন, লোকজীবনের চিত্রকলার মুর‌্যাল সাজানো হয়েছে। সোনারগাঁয়ে ভ্রমণে বা পিকনিকে এসে অনেকে মেলাকে বাড়তি পাওনা হিসেবে কথা বলছেন অনেক দর্শনার্থী।

টাঙ্গাইল থেকে শিক্ষা সফরে আসা একটি বেসরকারী কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, এখানে শিক্ষা সফরে এসে সোনারগাঁয়ের প্রাচীন রাজধানীর ইতিহাস ঐতিহ্যে দেখার সঙ্গে বাড়তি পাওয়া হিসেবে মেলাটি উপভোগ করলাম।

মেলায় একটি স্টলের মালিক কবির হোসেন জানান, মেলায় তার বেচাকেনা ভালই চলছে। তবে শুক্রবার ও শনিবার একটু বেশি বেচাকেনা হয়। তার দোকানে রয়েছে বাহারি জামদানি শাড়ি।

এই মেলায় এবার রয়েছে- কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা, সোনারগাঁয়ের পাটের কারুশিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশ, মুন্সীগঞ্জের পটচিত্র, ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, চট্টগ্রামের নকশি পাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি-ঘোড়া, পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশী কাঁথা, মুন্সীগঞ্জের শীতলপাটি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কারুপণ্য এবং সিলেটের মণিপুরি তাঁতপণ্য দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এর পাশাপাশি গ্রামীণ খেলাধুলা, লোক জীবন প্রদর্শনী ও মনোজ্ঞ লোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।

ফাউন্ডেশনের পরিচালক এসএম রেজাউল করিম জানান, এবার মেলায় কর্মরত কারুশিল্প প্রদর্শনীতে ৩২ টি স্টলসহ সর্বমোট ১ শত স্টল রয়েছে। এতে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতযশা ৬৪ জন কারুশিল্প সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। আগত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা চত্বর প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত