ইংলিশ পরীক্ষায় ‘ফেল’ বাংলাদেশ

| আপডেট :  ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৪  | প্রকাশিত :  ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৪

ঘরের মাটিতে অপ্রতিরোধ্য টাইগারদের একমাত্র আক্ষেপ ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়। সেই ইংলিশ বধের লক্ষ্যে মিরপুরে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে হেরে অপেক্ষার পালাটা আরো ভারী হয় টাইগারদের। এদিকে প্রথম ওয়ানডের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে আজ বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর দিন। কিন্তু টসে জিতে বোলিং করতে এসে ইনিংসের শুরুতেই পেসার তাসকিন আহমেদ স্বাগতিকদের আনন্দে ভাসালেও পুরো ম্যাচ জুড়ে তা ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। ইংলিশ ব্যাটার জেসন রয়ের শতক ও জস বাটলারের বিধ্বংসী ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানের পুঁজি পায় ইংল্যান্ড। সে লক্ষ্য ব্যাট করতে নেমে ১৩২ রানের হার দিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা। এদিকে সাকিব-তামিমদের বিপক্ষে টানা দুই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে নিয়েছে ইংলিশরা।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরেছেন বাংলাদেশের দুই টপ অর্ডার ব্যাটার। ইংলিশদের দেওয়া ৩২৭ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশে হয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে আসে টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস। তবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নেমে স্যাম কারানের প্রথম দুই বল দেখেশুনে খেলেন টাইগার কাপ্তান তামিম ইকবাল। এরপর তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে লিটনের সঙ্গে প্রান্ত বদল করেন তিনি।

তবে কারানের করা চতুর্থ বলে জেসন রয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন লিটন। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে আগের ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো এই ব্যাটার নিজের প্রথম বলেই খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পিছনে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। ফলে প্রথম ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পরে বাংলাদেশ।

তৃতীয় উইকেটটি আসে টাইগার অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম মাধ্যমে। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার শুরুর ধাক্কা সামাল দেবার চেষ্টা করতে চাইলেও ব্যর্থ হন। ইংলিশ বোলার কারানের দ্বিতীয় ওভারে ৫ বলে ৪ করে সাজঘরে ফিরেন তিনি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব-তামিমের ব্যাটে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে বাংলাদেশ।

দুই বন্ধু মিলে অর্ধশত রানের জুটি করলেও তা বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেনি। ৬৫ বলে ৩৫ রান করে মঈন আলীর বলে আউট হন ওয়ানডে অধিনায়ক। পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন সাকিব।

তবে আদিল রশিদের বলে এ দুজনের ৩৪ রানের জুটি ভাঙে। ব্যক্তিগত ৫৮ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। এরপর উইকেটে আসে আফিফ হোসেনকে সাথে নিয়ে রান চাপ কমাতে থাকেন রিয়াদ। তবে আফিফের ঝড় ইনিংস বেশিক্ষণ টিকে থাকেনি ২ চার ও ১ ছয়ে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরন তিনি। পরে ৪৯ বলে ৩২ করে দ্রুত প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন রিয়াদও। শেষ দিকে তাসকিনের ক্যামিং ইনিংস কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে টাইগার ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান করে টাইগাররা। ইংলিশদের হয়ে বল হাতে ৪টি করে উইকেট নেন

ইংলিশ ক্রিকেটের গোড়াপত্তন করেছেন জেসন রয় ও ফিল সল্ট। টাইগারদের হয়ে দুই বাঁহাতি স্পিনার বোলিং শুরু করলেও সফলতার দেখা পাননি। বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসের সপ্তম ওভারে সফরকারী শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ওপেনার ফিল সল্ট টাইগার স্পিডস্টারের করা গুড ল্যান্থ ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। ১৫ বলে ৭ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ইংলিশ ওপেনার।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মালান ও রয় দেখেশুনে খেলতে থাকেন। এই দুই টপ অর্ডার মিলে গড়েন ৫৮ রানের জুটি। বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যাওয়া পার্টানারশিপ ভাঙেন মিরাজ। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ানকে লেগ বি ফোরের ফাঁদে ফেলেন টাইগার অফ স্পিনার। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে নেমে জেমস ভিন্স বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি।

দলীয় ৯৬ রানে তাইজুলের শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৫ রান করে সাজঘরে ফিরেন ভিন্স। চতুর্থ উইকেটে ক্রিজে নামেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ওপেনার জেসন রয় ও বাটলারের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৬৯ রান তুলেছেন এই দুই ডানহাতি ব্যাটার। সেই সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারের ১২ তম শতক হাঁকিয়েছেন রয়। দুই হার্ড হিটার ব্যাটারের ১০৯ রানের জুটি ভাঙেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এই বাঁহাতি স্পিনারের ঘূর্ণিতে লেগ বি ফোরের ফাঁদে পড়ে ১৩২ রান করে সাজঘরে ফিরেন জেসন রয়।

তবে শেষ দিকে অধিনায়ক জস বাটলারের বিধ্বংসী ৬৪ বলে ৭৬ রানের ইনিংস ও মঈন আলীর ৪২ রানে নির্ধারিত ৫০ ওভারে রানের বিশাল সংগ্রহ পায় সফরকারীরা। টাইগারদের হয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত