শিবচরে এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ভেঙে যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত বেড়ে ২০

| আপডেট :  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:২০  | প্রকাশিত :  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:২০

রিপোর্ট মো. সবুজ খান মাদারীপুর থেকে: মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় ইমাদ পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এ পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩০ জন।

আহতরা শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজ রোববার (১৯ মার্চ) সকালে শিবচরের কুতুবপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এঘটনার বিষয়ে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম, ফরিদপুর হাইওয়ের পুলিশ সুপার মো. মাহবুব,মাদারীপুর রিজিওনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইওয়ের ডিআইজি সালমা বেগম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এসময় শিবচর উপজেলা প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা জায়, রোববার (১৯ মার্চ) সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। পদ্মাসেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় বাসটির সামনের একটি চাকা ফেটে যায় এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হয় এবং ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে আরো ২ জন নিহত হয়েছে বলে জানা যায়।এ দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।শিবচরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান স্থানীয়রা।

দুর্ঘটনার সময় ওই বাসে ছিলেন আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তার শিশু সন্তান সাজ্জাদ। তারা দু’জনকেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা।

আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘হঠাৎ কী যে হয়ে গেলো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো মাথায় আসমান ভেঙে পড়তাছে। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে রেখে আল্লাহরে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেলো। উদ্ধারের পর অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন আনোয়ারা বেগম।

কিছুক্ষণ পর ঘটনার ভয়াবহতা দেখে আঁতকে উঠলেন এবং সন্তানকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। বারবার আল্লাহকে ডাকছিলেন এবং আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জানাচ্ছিলেন তিনি। ঘোর কাটলে নিজের পরিচয় দিয়ে তিনি জানান, বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে বাসে ওঠেন তিনি। আনোয়ারা বেগম ওই এলাকার গারফা গ্রামের তাহিম মোল্লার স্ত্রী।

আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি বেশ দ্রুত গতিতে চলছিলো। কিছুক্ষণ পরেই পদ্মাসেতু। এমন আলোচনা করছিলো যাত্রীরা। হঠাৎ করেই গাড়িটি রাস্তা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছিলো। ওই সময় শুধু সন্তানকে জড়িয়ে রেখেছিলাম।

তিনি আরো বলেন, ‘বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে ভোর ৬টায় গাড়িতে উঠি। ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকায় বড় বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার মুহূর্তে মনে হয় জ্ঞান ছিলো না। গাড়ির মধ্যে থেকে কে বা কারা বের করে আনছে তা মনে নাই। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে এখনও।

মাদারীপুর রিজিওনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হাইওয়ের ডি আই জি সালমা বেগম বলেন, এ দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত