সোনারগাঁয়ে আশ্রম প্রাঙ্গণের বাতাসে বইছে গাঁজার গন্ধ। প্রকাশ্যেই সেবন ও বিক্রয়
আল আমিন কবির, সোনারগাঁও নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদীতে শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৩ তম তিরোধান উৎসব পালিত হচ্ছে।
তিরোধান উৎসব উপলক্ষে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম কর্তৃপক্ষ আয়োজন করে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা উৎসব উপলক্ষে আশ্রম ও এর আশপাশের এলাকা সহ আশ্রমের প্রধান ফটক ও যাত্রী নিবাসের ভবনগুলোতে নানা রকম আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়।
গতকাল শনিবার থেকে শুরু হয়ে আগামীকাল সোমবার শেষ হবে তিরোধান উৎসবের মুল অনুষ্ঠানিকতা।
সপ্তাহ ব্যাপী মেলাকে ঘিরে মাদক কেনাবেচা, সেবন ও আসর বসার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, এতে তরুণ ও কিশোরেরা বিপথগামী হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ।
স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার বারদী এলাকায় প্রতিবছর দেশি বিদেশি হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় বারদী আশ্রমে।
বারদী আশ্রমের মেলাকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের ন্যায় মেলায় বসে রকমারি খাবারের দোকান ও সহ বিভিন্ন বিনোদন ও গৃহস্থালি তৈজসপত্রের দোকান সহ বিভিন্ন বিনোদন মেলার প্রদান আকর্ষন হয়ে থাকে এবারে প্রভাবশালি নেতার দূর্নীতির কারনে দোকানের জায়গা না পেয়ে হতাশায় পরেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশে একাধিক ব্যক্তি জানান, এবারে ১৩৩ বসরের ঐতিহ্যকে ভেঙে দিলো এক প্রভাবশালি নেতা মেলা উপলক্ষে চাহিদার ৮ লক্ষ টাকা দিতে না পারায় মেলার সৌন্দর্য রকমারী দোকান পাঠ সহ বিনোদন মেলার আগের দিন সরিয়ে অন্যত্র দেয়ার অভিযোগ করেন। সাধারন দোকানদাররা আরো বলেন মেলা ভিতরের অংশ মাদকের হাট বসিয়ে আমাদের মতো সৎ ব্যবসায়ীদের বাহিরে ফেলে দিলো কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কেউ কেউ মাদক ও অশ্লীলতার মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে রাখছেন, সপ্তাহ ব্যাপী এই মেলায় আগত দোকান থেকে অনুপাতে দুই থেকে বিশ, ত্রিশ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়।
প্রতিদিন উঠছে লাখ লাখ টাকা। সব মিলে ওখানে বাণিজ্য হচ্ছে অর্ধকোটি টাকা। এ টাকায় অনেকে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনেছেন।
সরে জমিনে দেখা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এখানে চলছে মাদক বিক্রয় সেবন ও অশ্লীলতা। মেলার শুরুর আগেই নেশাখোররা আশ্রমের চারপাশে আস্তানা করে বসেছে। সকল প্রকার মাদকদ্রব্যই পাওয়া যায় এ মেলায়। নেশাখোরদের দেখলে মনে হয় মেলা প্রাঙ্গণ যেন নেশার স্বর্গরাজ্য ও নিরাপদ স্থান। দলে দলে আস্তানা বেধে সেবন করেছে মাদকদ্রব্য। আশ্রম প্রাঙ্গণের বাতাসে বইছে গাঁজার গন্ধ। মেলা কে গঞ্জিকা সেবীদের মেলা হিসেবে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
৪ জুন রবিবার বিকেলে ওই মেলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হাজারো মানুষের ভিড়। প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে মেলাটির নানা কার্যক্রম।
সেখানে প্রকাশ্যে গাঁজা, ইয়াবা হেরোইন সহ বিভিন্ন মাদকের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। নেশাখোরেরা সেখানে এসে আড্ডা দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা অভিযোগ করেন, মেলার নামে এখানে যেভাবে দিন–রাতে মাদকের আসর বসছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। মেলা এলাকার শতাধিকের উপরে মাদক কেনাবেচা ও সেবনের জমজমাট আড্ডা চলছে। এতে মেলা ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নেশাগ্রস্ত ও বিপথগামী হয়ে পড়ছে কিশোর-তরুণেরা। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক পরিবেশ। ওপরে মেলা আর ভেতরে চলছে কোটি টাকার মাদকের ব্যবসা।
এবিষয়ে বারদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান লায়ন মো: বাবুল হোসেন বলেন বিগত বছরের চেয়ে এবারে লোকনাথ ভক্তদের সেবায় আমরা জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ও সরাসরী কাজ করেছি, চাঁদাবাজির বিষয়টি উরিয়ে দিয়ে তিনি জানান ডিসি মহোদয়ের নির্দেশে ভক্তদের গাড়ী পার্কিং সহ চলাচলের উপযোগী করতে মাঠ প্রাঙনে কোন ধরনের দোকান বসানো ডিসি সাহেবের নির্দেশই হয়েছে তবে ভক্তদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই আমরা মাঠে কাজ করেছি আর আশ্রমে মাদকের সেবনের বিষয়ে তিনি অবগতন নয় বলেও জানান।
প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এসব অপকর্ম হচ্ছে এমনটিই মনে করেন সচেতন মহল।
মেলার সাথে মাদক সেবন ক্রয় বিক্রয় ও অশ্লীলতা রোধে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহল।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত