কলেজ এমপিওর পর চাকরি গেল শিক্ষকের, নতুনদের টাকায় নিয়োগের অভিযোগ

| আপডেট :  ০৮ জুন ২০২৩, ০৮:৪৮  | প্রকাশিত :  ০৮ জুন ২০২৩, ০৮:৪৮

জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর: মাদারীপুরের কালকিনিতে খাসেরহাট সৈয়দ আবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জীব বিজ্ঞান প্রভাষককে স্বেচ্ছাচারিকা ও জুলুম করে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

২০২২ সালের ৬ জুলাই নতুন করে ২ হাজার ৭১৬টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার। এরমধ্যে একটি ছিল খাসেরহাট সৈয়ল আবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজ। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০১৩ সালের শুরু থেকে কমিটির মাধ্যমে জীববিজ্ঞান প্রভাষক পদে যোগদান করেছিলেন আকলিমা জাহান, এমপিওভুক্ত হওয়ার পর তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক বুধবার (৭ জুন) রাতে তার নিজ সংবাদ সম্মেলন করেন ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ও শিক্ষিকা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৩ সালে খাসেরহাট সৈয়ল আবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের জীববিজ্ঞান প্রভাষক হিসেবে বিনা বেতনে দীর্ঘদিন ধরে চাকুরী করে আসছিল।২০২২ সালে এমপিএ ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে আমি এমপিএ হওয়ার জন্য কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে ২লাখ টাকা দেই।কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অন্যে শিক্ষকের কাছ থেকে বেশি আর্থিক সুবিধা ভোগ করার জন্য কোন কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে কলেজের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর ও শ্রেণী কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাঁধা প্রদান করেন।উক্ত প্রতিষ্ঠানের কমিটিরা শিক্ষকদের নামের তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দিয়ে ফরোয়ার্ডিং ডিও অফিসে পাঠান।এরপরে থেকে আমি দীর্ঘদিন তাদের কাছে ধন্না দিয়ে পায়নি কোন সমাধান। এরপরে বিষয়টি তৎকালীন সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা মহোদয়কে অবগত করলে, মহোদয়গণ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে এহেন আচরণ পরিহার করে আমাকে প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে কার্যক্রমে অংশগ্রহনের সুযোগ দেবার নির্দেশ দেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তা না করে নানান বাহানায় প্রতিষ্ঠানে আমি গেলে শ্রেনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাঁধা প্রদান সহ হাজিরা খাতা আলমারিতে আটকে রাখেন।

তিনি আরও অভিযোগ করে জানান, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দীর্ঘ দিন থেকে শিক্ষকতা করা আমাকে বিনা নোটিশে মৌখিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে; যা সম্পূর্ণ অনৈতিক। প্রতিটি নিয়োগের বিপরীতে লাখ লাখ করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে কলেজের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুম ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনি শাজাহান নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। চাকরি হারিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করতেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি আমি যেন আমার চাকরিটা ফেরত পেতে পারি তাহলে আমি আমার পরিবারকে নিয়ে বাঁচতে পারবো।আর তা না হলে আমার আর বাঁচার মতো কোন সম্বল থাকবে না।

খাসেরহাট সৈয়দ আবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনি শাজাহান বলেন, তার কাছে থেকে কোন টাকা পয়সা নেওয়ার হয়নি।সে আমাদের এখানে কয়েদিন চাকরি করার পরে শিবচরে স্কুলে যোগদান করেছি।সেখান থেকে সে বেতন তুলতো।যখন এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিএ ঘোষণা হয়। তখন সে সেই স্কুলে ছেড়ে চলে আসে আমাদের স্কুলে। সরকারি নিয়ম আছে প্রতিষ্ঠান থেকে চলে গেলে পরে আসলে তাকে আর এখানে নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম নেই।তাকে বার বার আসতে বলা হয়েছিল কিন্তু সে আসে নাই। এখন আমাদের কিছুই করার নেই।

খাসেরহাট সৈয়দ আবুল হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুনকে তার ব্যবহুত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও কোন সারা মেলেনি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাবিবউল্লাহ চৌধুরী বলেন, এমপিওভুক্তির পর শিক্ষকদের নিয়োগ এবং আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না; তবে, নিয়োগ বাণিজ্যসহ যেসব অনিয়মের কথা এসেছে তা নিয়ে যদি কেউ অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা তা খতিয়ে দেখব।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত