আফগানিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ
চট্টগ্রামে ওয়ানডে সিরিজে হারের পর আজ সিলেটে টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে মাঠে নামে টিম টাইগার্স। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারী শিবির। কিন্তু অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীর অর্ধশতক ও ওমরজাইয়ের ঝড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। ১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাওহীদ হৃদয় ও শামিম হোসেনের ৭৩ রানের বিধ্বংসী জুটিতে ১ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ফজলহক ফারুকির বলে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার রনি তালুকদার। এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ থাকতে পারেন নি নাজমুল হোসেন শান্তও। পাওয়ার প্লের পরের ওভারে ফিরেছেন ওপেনার লিটন দাসও। ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের অস্বস্তি বাড়িয়ে অষ্টম ওভারে এবার সিলেটে বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা। মাঠে যদি খেলা আর না গড়ায় বৃষ্টি আইনে জয়ী হবে আফগানিস্তান।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টাইগারদের সংগ্রহ ৭.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে দারুণ এক বাউন্ডারিতে নিজের রানের খাতা খুলেন রনি। কিন্তু ওভারের শেষ বলে ফারুকির ইন সুইংয়ে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। রনি ফিরে গেলেও ইনিংসে রানের চাকা সচল রাখেন লিটন দাস ও নাজমুল শান্ত। তবে ষষ্ঠ ওভারে মুজিবের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শান্ত।
দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাসও। সপ্তম ওভারে ওমরজাইকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে মিড অফে রশিদের তালুবন্দি হন লিটন। অষ্টম ওভারের খেলা শুরু হতেই বৃষ্টির হানায় তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে ১৭ মিনিট বন্ধ থাকার পর আবারো শুর হয় ম্যাচ। বৃষ্টির পর দেখেশুনে খেলতে থাকে সাকিব আল হাসান ও তাওহীদ হৃদয়।
ইনিংসের ১১তম ওভারে ফরিদ আহমেদের বলে ১৯ রান করে সাকিব সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৬৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা টাইগারদের পথ দেখান শামিম হোসেন ও তাওহীদ হৃদয়। এই দুই তরুণ ক্রিকেটারের ঝড়ো জুটিতে ম্যাচে ফিরে স্বাগতিকরা। ১৩তম ওভারে ওমরজাইয়ের বলে ২১ রান তুলেন এই দুই মিডেল অর্ডার ব্যাটার। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে
১৩ ওভারেই দলীয় শতরান পূরণ হয়।
দলীয় শতরান পূরণের পর আরো দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে থাকে হৃদয়-শামিম। তাতেই জয়ের ভীত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ১৮ বলে জিততে বাংলাদেশের দরকার ১৯ রান। এমন সমীকরণে রশিদের ঘূর্ণিতে আটকা পড়েন শামিম হোসেন। ২৫ বলে ৩৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। কিন্তু শেষ দিকে ক্রিজে থেকে টাইগারদের জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়। এই ডানহাতি ব্যাটারের রানের ইনিংসে বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয়ে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরতেই আফগান ওপেনারদের চাপে রাখেন নাসুম। এই বাঁহাতি স্পিনারের প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান নিতে সক্ষম হয় আফগান ওপেনাররা। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদ রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেট পেয়ে যেতেন। কিন্তু ডাউন দ্য উইকেটে এসে গুরাবাজের খেলা লফটেড শটে বল উপরে উঠলেও রনি তালুকদারের দারুণ চেষ্টার পরও বল তালুবন্দি হয়নি।
তবে তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পেয়ে যায় বাংলাদেশ। নাসুমের বলে স্লগ সুইফ খেলতে গিয়ে তাওহীদ হৃদয়ের কাছে ধরা পড়েন জাজাই। এর ঠিক পরের ওভারেই আঘাত হানেন পেসার তাসকিন আহমেদ।
১১ বলে ১৬ রান করে স্কয়ার লেগে মেহেদী হাসান মিরাজের তালুবন্দি হন গুরবাজ। এরপর পঞ্চম ওভারে ওয়ানডেতে শতক হাঁকানো ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরানও ফিরে যান। শরিফুল ইসলামের বলে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
পাওয়ার প্লের পর ইনিংসের হাল ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন কারিম জানাত। সাকিব আল হাসানের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে বসেন এই অলরাউন্ডার। দলীয় ৫২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আফগানিস্তান।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন মোহাম্মদ নবী। এই দুই ব্যাটারের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত গড়তে থাকে আফগানিস্তান। কিন্তু ১৪তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার হন জাদরান। ২৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে দলীয় ৮৭ রান প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
জাদরান ফির গেলেও এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। শেষ দিকে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ঝড়ো বলে রান এবং অভিজ্ঞ নবীর রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নেন সাকিব। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন নবী।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত