মার্কিন নির্বাচন: কোন রাজ্যে কে এগিয়ে?

| আপডেট :  ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৭  | প্রকাশিত :  ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৭

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ৬ দিন। এবারের নির্বাচনও ২০২০ সালের পুনরাবৃত্তি হতে পারতো। কিন্তু গত জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেওয়ার পর থেকেই নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি পাল্টে যেতে থাকে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র কি প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পেতে যাচ্ছ? নাকি দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন?

নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির প্রধান দুই দলের প্রার্থী ও প্রচারণা শিবিরের দৌঁড়ঝাপ ততই বাড়ছে। হোয়াইট হাউজে যাওয়ার দৌঁড়ে কোন প্রার্থী এগিয়ে রয়েছে সে বিষয়ে নজরে রয়েছে মার্কিন ভোটারসহ পুরো বিশ্বের।

জাতীয়ভাবে এগিয়ে কোন প্রার্থী?

জুলাইয়ের শেষ দিকে কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন তিনি। বিপরীতে শুরু থেকেই রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সম্প্রতি এবিসি নিউজের এক জরিপে দেখা গেছে, ৪৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে আছেন হ্যারিস। বিপরীতে মাত্র এক শতাংশ কম সমর্থন রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

যদিও এ ধরনের জরিপগুলো পুরো দেশে একজন প্রার্থী কতটা জনপ্রিয় তার একটি আভাস দেয় বটে; তবে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষেত্রে তা যথাযথ নয়। এর প্রধান কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে।

নির্বাচনে জিততে হলে একজন প্রার্থীকে মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি পেতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের মোট রাজ্য ৫০টি। বেশিরভাগ রাজ্যের ভোটাররা বছরের পর বছর ধরে একই দলকে ভোট দেন। তবে কিছু রাজ্য আছে- যেখানে কোনও প্রার্থীরই জয়-পরাজয় সুনিশ্চিত থাকে না। এগুলোকে ব্যাটলগ্রাউন্ড বা স্যুইং স্টেট বা দোদ্যুল্যমান হিসেবে পরিচিত। নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে এই রাজ্যগুলো।

দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে এগিয়ে কোন প্রার্থী?

এবারের নির্বাচনে সাতটি রাজ্যকে স্যুইং স্টেট বা দোদুল্যমান রাজ্য হিসেবে ধরা হচ্ছে। এগুলোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এবিসি নিউজের জরিপ অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত উইসকনসিনে ট্রাম্প ও কমলা এগিয়ে ছিলেন সমান তালে। নেভাদা ও পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন। তবে মিশিগানে সামান্য পিছিয়ে আছেন কমলা হ্যারিস। এছাড়া নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া ও আরিজোনায় সামান্য এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প।

এই সাত রাজ্যে ৯৩ টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। তবে জরিপের এ ফলাফল পরিবর্তনশীল।

মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন ২০১৬ সালে ট্রাম্পকে জিতিয়ে দিতে সাহায্য করেছিল। জরিপে এই রাজ্যগুলোতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এগিয়ে থাকলেও নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প। ২০২০ সালে অবশ্য এই রাজ্যগুলোতে আবারও ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী বাইডেন জয়ী হয়েছিলেন। কমলা হ্যারিস যদি এবার এই তিন রাজ্যে জয় পান, তাহলে নির্বাচনে তার জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

হ্যারিস ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী মনোনীত হওয়ার পর থেকে নির্বাচনি লড়াইয়ে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। কখনও কখনও কোনও কোনও রাজ্যে পাঁচ শতাংশ পয়েন্টের ব্যবধানেও ট্রাম্পকে পেছনে ফেলেছিলেন তিনি।

পেনসিলভেনিয়ায় বাইডেন তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়েও সাড়ে চার শতাংশ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিলেন।

নির্বাচনে পেনসিলভেনিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য। কারণ দোদুল্যমান সাত রাজ্যের মধ্যে এটিতে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যে কারণে এই রাজ্যে জয় পেলে তাদের জন্য ২৭০ ইলেক্টোরাল কলেজে জয় পাওয়া তুলনামূলক সহজ হয়।

জরিপের গড় কীভাবে তৈরি করা হয়?

বিভিন্ন জরিপ সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয়ভাবে এই নির্বাচনের গড় তৈরি করা হয়। টেক্সট ম্যাসেজ, টেলিফোন কল বিভিন্ন মাধ্যমে এক ধরনের জরিপ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বিবিসির ব্যবহৃত গড়গুলো এবিসি নিউজের অংশ। এবিসি শুধু সেই জরিপগুলো অন্তর্ভুক্ত করে যেগুলো নির্দিষ্ট মান পূরণ করে; যেমন: কতজন ভোটার জরিপে অংশ নিয়েছে, জরিপটি কখন এবং কীভাবে করা হয়েছে ইত্যাদি।

জরিপগুলোর ওপর আস্থা রাখা যায়?

এই মুহূর্তের জরিপে দেখা যাচ্ছে, কামালা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় সব সুইং স্টেটে খুব কাছাকাছি অবস্থানে আছেন। যখন ব্যবধান এতোটা কাছাকাছি হয়, তখন বিজয়ী অনুমান করা কঠিন হয়ে যায়। ২০১৬ এবং ২০২০ উভয় ক্ষেত্রেই জরিপগুলো ট্রাম্পের জনসমর্থনকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারেনি। এবার এই সমস্যা সমাধানে জরিপ সংস্থাগুলো বিভিন্ন পরিবর্তন আনছে, পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে এসব সংশোধনীও ভোটের সঠিক চিত্র পুরোপুরি তুলে ধরতে পারে না।

সূত্র: বিবিসি

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত