১০টি ই-কমার্সে কার্ডের লেনদেন বন্ধ করল আরো তিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান

| আপডেট :  ২৬ জুন ২০২১, ০৩:৫২  | প্রকাশিত :  ২৬ জুন ২০২১, ০৩:৫২

ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা ঠেকাতে ই-ভ্যালিসহ অনলাইন কেনাকাটায় আগে পণ্য পরে দাম পরিশোধ করতে হবে। আর এ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ভোক্তার চুড়ান্ত দায় নিয়ে ওই বৈঠকে কোন সিন্ধান্ত হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ই-কমার্সের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বহুপক্ষীয় বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধি জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিন্ধান্ত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রিয় ব্যাংক এই সিন্ধান্ত কার্যকর করবে। তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া ই-ভ্যালির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি পরিদর্শন প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে আরো উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্টে সিসেটম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মেজবাউল হক, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সভাপতি শমি কায়সার প্রমুখ।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান জানান, ই-কমার্স লেনদেনে ভোক্তা পণ্য বুঝে পাওয়ার পর মেসেজে পেলে তারপর বিক্রেতা মূল্য বুঝে পাবেন। আর এই প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রিয় ব্যাংকের গেটওয়ের মাধ্যমে এই অর্থ লেনদেন হবে।

গ্রাহকদের পরামর্শ দিয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, ভোক্তারা যেন কোন পণ্যর দাম নগদ পরিশোধ না করেন। তারা যেন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ বা নগদের মতো মাধ্যম ব্যবহার করে কেনাকাটা করেন। ভোক্তা ও বিক্রেতা উভয়ের স্বার্থের জন্য এ খাতে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বা পরিচালন নির্দেশিকা তৈরী করা হবে।

প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়বদ্ধতায় আনতে কোন ধরনের জামানত নেওয়ার সিন্ধান্ত হয়েছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ধরনের বিষয়ে কোন সিন্ধান্ত বা আলোচনা হয় নি। প্রতিসমানগুলোর আয় এবং ব্যয়ের বৈষম্য ঠেকাতে উদ্যেগ নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ইভ্যালির সম্পদের চেয়ে দায় প্রায় ৬ গুণ বেশী। এই বিষয়ে আলোচনা হলেও বৈঠকে কোন সিন্ধান্ত হয়নি। তবে পেমেন্ট মনিটরিং করা করবে বাংলাদেম ব্যাংক। এ ছাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে প্যানেল কোড, ভোক্তা অধিকার আইন এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

শমি কায়সার বলেন, ই কমার্স একটি সম্ভাবনাময় খাত। এই খাতে কোন ধরনের প্রতারণা হউক এটা আমরা চায় না। তাই আমারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি দ্রুত একটি এসওপি করতে। যেখানে ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে প্রতিযোগীতাটাও যেন ভারসাম্য থাকে। এটা হলে অনেক ধরনের সংকট দূর হবে।

বৈঠকে ইক্যাবের পক্ষে ২টি দাবি জানানো হয়েছে উল্লেখ করে সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুর ওয়াহেদ তমাল বলেন, ইকমার্স প্রতিসমানগুলো কিভাবে পরিচালন হবে এজন্য একটি নীতিমালা এবং এসক্রো সার্ভিসের দাবি জানিয়েছি (বিদেশের প্রতিসমানগুলো ভোক্তা কোন দাম পরিশোধ করতে তার টাকার নিরপত্তা দেয় তৃতীয় পক্ষ এমন প্রতিসমান)। কিন্তু বাংলাদেশে কোন প্রতিসমান এই নিরপত্তা দিচেছ না। এই দুটি দাবি নিশ্চিত করা গেলে লাখ ভোক্তা নিরাপত্তা পাবেন।

ই-ভ্যালি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভোক্তা এবং তারা বিপুল ছাড় দিয়ে লোকসানে পণ্য বিক্রি করছে। যে কারণে দেশের ই-কমার্স ব্যবসায় অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে ভালো ও সত্ ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং ভবিষ্যতে এ খাতের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে।

বৈঠকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এবিষয়ে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গণমাধ্যমের সূত্রে বিষয়টি আমরা জেনেছি। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে একটি এসওপি সার্ভিস ডেভেলপ করা হবে। যাতে পণ্য ডেলিভারির আগে পেমেন্ট নেয়া না হয়। ব্যাংক বা ক্রেডিট কার্ড যাদের আছে, তারা পেমেন্ট কন্ট্রোল করবে। যেকোন রেগুলেটরি থেকে আসা সিদ্ধান্ত শুধু ইভ্যালি না বরং সবার জন্যই প্রযোজ্য হবে।

 

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত