দল ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দল ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। দুষ্ট লোকদের দুষ্টমি থেমে নেই। সেটি আমাদের দেশের ভেতর ও বাহিরে উভয় জায়গাই হচ্ছে। কারণ এ দেশের অর্থ সম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদ অনেকেই নির্লোভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এই দেশে যদি একটি বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে রাখা যায় এটা অনেকের জন্য ভালো সুযোগ।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে যদি দুর্বল জনসমর্থনহীন সরকার ক্ষমতায় রাখা যায়, তাহলে অনেকেই অনেক কিছু লুটেপুটে নিতে পারবে; কিন্তু এ দেশে যদি জনগণের কথা বলবে, জনগণের কথা চিন্তা করবে, যারা দেশের কথা বলবে দেশের কথা চিন্তা করবে- এমন কেউ যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে, তখন দেশের স্বার্থ ও জনগণের স্বার্থ নিরাপদে থাকবে। যারা শকুনের দৃষ্টি দিয়ে দেশটার দিকে, এই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের দিকে তাকিয়ে আছে- তারা ১০ বার চিন্তা করবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে ও জনসম্পৃক্তি নিশ্চিত করতে নরসিংদী হেরিটেজ রিসোর্টে বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সুযোগ পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করবে বিএনপি। এজন্য যেকোনো মূল্যে ৩১ দফার পক্ষে সমর্থন নেওয়ার জন্য জনগণের পেছনে ঘুরতে হবে। এই ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। জনগণের সম্পৃক্ততায় স্বৈরাচার পালিয়েছে, তবে দেশের ভেতরে-বাইরে দেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বর্তমানে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। সংগ্রাম করেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বৈরাচারকে সরিয়ে দিতে। এখন দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা করাসহ দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে কাজ করতে হবে। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কোদাল হাতে মাঠে নেমেছিল। সেই দলের নেতা হিসেবে আপনাকে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সংসদে দাঁড়িয়ে বলতে বাধ্য হয়েছিল- বিএনপির আমলে দেশে ছোট বড় মিলিয়ে ৮০ হাজার কলকারখানা স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের সময় সংবাদপত্র আমাদের বিরুদ্ধে, ম্যাডামের বিরুদ্ধে দলের বহু নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কত কী লিখেছিল; কিন্তু আমরা বলেছি, আমরা বাক-স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেছি। আমাদের সময় তো পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়নি। যেমন আমাদের বিরুদ্ধে ও আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়েছে। একইভাবে আমরা যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলাম তখন কি গুম খুন হয়েছিল? আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহামেদকে সীমান্তের উপারে নিয়ে ফেলে দিয়ে এসেছিল। সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলীসহ অনেক নেতাকর্মীকে গুম-খুন করা হয়েছিল। বিএনপির সময় তো এমন হয়নি। কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা বাক-স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলেই আমরা দেশের শিল্প কারখানার উৎপাদন বাড়িয়েছি। আবার সুযোগ পেলে আমরা এই কাজগুলো পুনরায় আরও ভালোভাবে করব। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনে ৩১ দফা আরও বাড়ানো হবে। এই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রথমেই জনগণের রায় আমাদের প্রয়োজন। তাই যেকোনো মূল্যে স্ব স্ব অবস্থান থেকে আপনাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে।
নরসিংদী জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের সভাপতিত্বে কর্মশালায়- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, সহ-ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক হালিমা নেওয়াজ আরলি, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আক্তার, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিছুর রহমান তালুকদার খোকন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জুর এলাহীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতারা ও জেলা বিএনপি, জেলা যুবদল, জেলা ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত