ক্ষমতাচ্যুত নসরুল হামিদ বিপুর গোপনে সম্পত্তি বিক্রির চেষ্টা, হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি: ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। গা-ঢাকা দিয়েই তিনি শত কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রির মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর দুর্নীতির গুঞ্জনের কারণে ক্রেতারা ঝুঁকি নিতে নারাজ।
গুলশান ক্লাবের বিপরীতে তার মালিকানাধীন এক বিঘা জমি, যার মূল্য অন্তত ২০০ কোটি টাকা, দীর্ঘদিন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। একইভাবে মাদানী এভিনিউর পাশে পাঁচ বিঘার একটি বাগানবাড়িও বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। বড় অংশ বিক্রি সম্ভব না হওয়ায় প্লট ভাগ করে বিক্রি করছে তার কোম্পানি ‘হামিদ রিয়েল এস্টেট’।
সূত্র জানায়, গুলশান, বনানী ও নিকেতনের কয়েকটি বাড়ি ইতোমধ্যে বিক্রি করে সেই অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন নসরুল হামিদ।
বর্তমানে তিনি কলকাতায় অবস্থান করছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। অনেকে তাকে ‘শেখ হাসিনা পরিবারের ক্যাশিয়ার’ হিসেবেও উল্লেখ করছেন।
বিদ্যুৎ খাতের এক ব্যবসায়ী জানান, ‘নসরুল হামিদ কয়েকবার ফোন করে জমি কিনতে বলেছেন, তবে তার সম্পত্তি কেনা এখন ভয়ংকর ঝুঁকির।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঘুষ, স্বজনপ্রীতি, বিদেশে অর্থ পাচার—সবই তার নামের সঙ্গে যুক্ত।
দুদক ইতোমধ্যে তার, স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারিফ হামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ব্যাংক হিসাবে ৩,১৮১ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্যও প্রকাশ পেয়েছে।
গত ২২ আগস্ট ‘প্রিয়প্রাঙ্গণ’ ভবনে অভিযান চালিয়ে নগদ টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও অস্ত্র-গুলি জব্দ করেছে যৌথ বাহিনী।
কেরানীগঞ্জে তার দখলে নেওয়া জমির বড় অংশ স্থানীয়রা পুনর্দখল করেছে। সেসব সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ এখন বিএনপির এক নেতার হাতে রয়েছে বলেও জানা গেছে।
নসরুল হামিদের ভাগ্য এখন দুর্নীতি, পাচার আর পতনের ছায়ায় আচ্ছন্ন।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত