কমলা হ্যারিসকে ‘সরাতে’ ৫৬ আইনপ্রণেতার চিঠি

| আপডেট :  ৩০ জুন ২০২১, ০৯:৩২  | প্রকাশিত :  ৩০ জুন ২০২১, ০৯:৩২

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের নেতৃত্বের ভূমিকা থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সরাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে ৫৬ আইনপ্রণেতা চিঠি পাঠিয়েছেন। এই চিঠিতে তারা অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে পরিবর্তনের জন্য প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ জানিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, রিপাবলিকানস হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ সদস্যরা পরিস্থিতি সমাধানের জন্য হ্যারিসের নিয়োগের বিষয়ে ‘গুরুতর উদ্বিগ্ন’।

বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে হ্যারিসকে সীমান্ত পেরিয়ে আসা অভিবাসীদের নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। তার নিয়োগের পর থেকে তিনি সীমান্ত পরিদর্শন না করায় হাইপ্রোফাইল জিওপি এবং ডানপন্থী ব্যক্তিত্বদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছেন।

উইসকনসিনের জিওপি রিপ্রেজেনটেটিভ গ্লেন গ্রোথম্যানের নেতৃত্বে ৫৬ জন আইনপ্রণেতার স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি) প্রকাশিত সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ২০২১ সালের মে মাসে মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্তে তারা ১ লাখ ৮০ হাজার ৩৪ জন লোকের মুখোমুখি হয়েছেন। অথচ গত বছরের একই মাসে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২৩ হাজার ২৭৭। যা ৬৭৫ শতাংশ বেশি।

চিঠিতে বলা হয়, ‘এই পরিসংখ্যানে “গট অ্যাওয়েস” বা পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে সিবিপি কর্মকর্তারা অনুমান করেছেন যে ২০০০ অর্থ বছরে প্রতিদিন গড়ে ২০০-এর কম অভিবাসী পালিয়ে এসেছে। অথচ এখন দিনে গড়ে এক হাজারের মতো আসছে।

গত দুই দশকে এ ধরনের সীমান্ত সংকট দেখা যায়নি। এরপরও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এখনো এই সংকট দেখার বিষয়ে পর্যাপ্ত আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

ভাইস প্রেসিডেন্টকে এই সংকট সমাধানের দায়িত্ব দেয়ার পর ৮৫ দিনের মধ্যে তিনি সীমান্ত পরিদর্শন করেননি। এ ছাড়া তিনি সীমান্ত পেট্রল অ্যাজেন্ট, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি।

‘আমাদের অভিজ্ঞতায়, প্রতিদিন এখানে আসা হাজার হাজার মানুষের উৎস এবং অনুপ্রেরণা সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং পর্যবেক্ষণ বিষয়ে জানতে আমাদের কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের কঠোর পরিশ্রমী সীমান্ত প্যাট্রল, আইসিই এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের অপমান। যারা প্রতিদিন জীবনকে লাইনে ফেলে কাজ করে যাচ্ছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট তাদের সঙ্গে এখনো কথা বলতে পারেননি-এটা তাদের অপমানেরই শামিল।’

হ্যারিস অভিবাসনের ‘মূল কারণ’ যাচাই করে অবৈধ অভিবাসন বন্ধের চেষ্টা করছেন এবং বিষয়টি নিয়ে গুয়েতেমালায় তার সাম্প্রতিক সফরকালে আলোচনা করেছেন বলে যে দাবি করেছেন চিঠিতে তার সমালোচনা করা হয়।

বাইডেনকে সম্বোধন করে চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘তার নিয়োগের সময় আপনি বলেছিলেন যে, ‘আমি এই কাজের জন্য তার চেয়ে যোগ্য কেউ আছে বলে ভাবতে পারি না।’ আমরা এর সঙ্গে একমত নই।

‘ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিসের কাছ থেকে দেশ আর এক মিনিটও নিষ্ক্রিয়তা অর্জন করতে পারে না। যেহেতু আপনি প্রকাশ্যে ভাইস প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করেছেন; সুতরাং আপনাকেই তার নিষ্ক্রিয়তায় নিরুৎসাহিত করতে হবে।

“নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সবাই ভুল করেছিলাম এবং যখন অন্য কাউকে কোনো কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা দরকার তখন আমরা বুঝতে পেরেছি। আমরা এই সীমান্ত সংকট মোকাবিলায় আপনাকে সহায়তা করার জন্য আপনার প্রশাসনের অন্য কাউকে খুঁজে বের করতে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি।’

এদিকে বাইডেন প্রশাসনের কট্টর সমালোচক টেক্সাসের জিওপি সিনেটর টেড ক্রুজ জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সীমান্তে না আসার জন্য হ্যারিসকে দোষারোপ করেছেন।

অবশ্য হ্যারিস এবং তার কর্মীরা জোর দিয়ে বলছেন যে তাদের কূটনৈতিক কাজটি মেক্সিকো এবং গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস ও এল সালভাদোরকে কেন্দ্র করে। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট সুবিধাজনক সময়ে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত