তালেবান রুখতে আফগানিস্তানে কারফিউ
তালেবান রুখতে আফগানিস্তানে রাতে কারফিউ জারি করেছে সরকার। এদিকে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত শান্তি ফিরবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তালেবান। শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ ও তালেবানের যাতায়াত সীমিত করতে ৩১ প্রদেশে রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আহমাদ জিয়া জিয়া জানান, স্থানীয় সময় শনিবার থেকে রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত এই কারফিউ চলবে। এদিকে, বিমান বাহিনীর হামলায় শুক্রবার দেশটির জাওজান ও হেলমান্দ প্রদেশে তালেবানের অন্তত ৩৩ সদস্য নিহত হয়েছে। হামলায় ২ প্রদেশের তালেবান ঘাঁটির ৩টি ট্রাক, ৬টি মোটর সাইকেল, ২টি বাঙ্কার এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ ধ্বংস হয়েছে। মার্কিন সেনা ও ন্যাটো সদস্য প্রত্যাহারের মধ্যেই আফগানিস্তানে বেড়েই চলেছে তালেবান আগ্রাসন।
আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত শান্তি ফিরবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্যতম মুখপাত্র সুহেল শাহীন। এদিকে, তালেবান আগ্রাসন ঠেকাতে রণকৌশল বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগান সরকার।
প্রায় ২০ বছর ধরে যুদ্ধ চালানোর পর আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করেছে বিদেশি সেনারা। এই পরিস্থিতিতে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠা তালেবানের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে আফগান বাহিনীকে।
মাত্র ৮ সপ্তাহে আফগানিস্তানের ২শ জেলা দখলের দাবি করেছে তালেবান। আফগান সরকার বার বার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও, তাতে রাজি নয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি।
তালেবান মুখপাত্র সুহেল শাহীন বলেন, আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, তালেবান একচ্ছত্র ক্ষমতায় বিশ্বাসী না। কারণ, অতীতে যে সরকারই একচ্ছত্র ক্ষমতায় ছিলো, তারা কেউই সফল হয়নি। তাই আগের ফর্মূলায় সরকার গঠন করতে চাই না।
আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনাকে ইতিবাচক বলে আখ্যা দিয়ে তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীন জানান, আশরাফ গনি সরকার থাকা অবস্থায় যুদ্ধবিরতি মানে তালেবানের আত্মসমর্পণ। তালেবান শুধু তখনই অস্ত্র ত্যাগ করবে যখন কাবুলে একটি নতুন সরকার গঠিত হবে। যে সরকার তালেবানের কাছ এবং আফগানিস্তানের সব নাগরিকের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যথায় আফগানিস্তানে শান্তি ফিরবে না।
তালেবানের আরেক মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের দাবি, আফগানিস্তানের সঙ্গে তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও ইরানের সীমান্ত বা প্রায় ৯০ ভাগ সীমান্ত তাদের দখলে। এমন পরিস্থিতিতে, কাবুলসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা শহর, সীমান্ত চেকপোস্ট ও অবকাঠামো ঘিরে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন আফগান ও মার্কিন কর্মকর্তারা। এদিকে, তালেবানকে আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত