সর্বজনীন পেনশন: সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক হলেও জনকল্যাণমুখী

| আপডেট :  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:২৬  | প্রকাশিত :  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:২৬

 

এক বছরের মধ্যেই সর্বজনীন পেনশন চালু করতে যাচ্ছে সরকার। তবে প্রশ্ন উঠছে এই সুবিধা সত্যিকার অর্থেই কতটা সর্বজনীন হবে? পাশাপাশি এ আলোচনাও শুরু হয়েছে যে, এটি আগামী নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার নিয়ামক কিনা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আপাতদৃষ্টিতে এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হলেও, সামগ্রিকভাবে তাতে মানুষের কল্যাণই হবে। তবে বাস্তবায়নের আগে দরকার হবে গবেষণা করে একটি সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়নের।

শরীয়তপুরের জসীম উদ্দিন। ষাটোর্ধ্ব এই মানুষটি দীর্ঘদিন বেসরকারি চাকরী শেষে এখন বেকার। নেই কোন সঞ্চয়, দুইমেয়ে সহ চারজনের পরিবার নিয়ে তাকে হিমশিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত। সর্বজনীন পেনশন চালু হলে তার কি লাভ?

জসীম উদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত আমি তেমন কোনো পেনশন পাইনি। এখন শুনছি সরকার পেনশন দিবে। সরকার যদি সত্যিই পেনশন দেয় তাহলে ভবিষ্যতে আমি আমার পরিবার নিয়ে পরিকল্পনা করে এগিয়ে যেতে পারব।

অর্থমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, প্রথম অবস্থায় ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা এ সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হবেন। একজন অংশগ্রহণকারী যে পরিমাণ অর্থ জমা রাখবেন, সরকারও সেখানে ততটুকু দেবেন। এখন প্রশ্ন যাদের বয়স ৫০ এর বেশি বা যাদের সামর্থ্য নেই মাসিক টাকা জমা দেয়ার, তারা কি এই সুবিধার বাইরেই থেকে যাবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে সিদ্ধান্তটি যুগান্তকারী হলেও , সত্যিকার অর্থেই এটিকে সর্বজনীন করতে প্রয়োজন সঠিক নীতি প্রণয়ণ।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটাতো একধাপে যাবেনা, ক্রমান্বয়ে পেনশনের টাকাটা দেয়া হবে। প্রথমদিকে হয়তো এটা স্বেচ্ছাসেবীমূলক হবে, তারপর সেটাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। এই সবকিছু বিবেচনা করে এই ফান্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা। এটা অনেক ভালো একটি উদ্যোগ, আমার মনে হয় এটাকে সবারই স্বাভাবিকভাবে নেয়া উচিত।

আগামী নির্বাচনের আগেই এই স্কিমের পাইলটিং শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বিশ্লেষকরা অবশ্য সার্বিকঅর্থে এ সিদ্ধান্তকে জনকল্যাণমূলক বলেই মূল্যায়ন করতে চান।

পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকার যখন কোনো বড় কর্মযজ্ঞ শুরু করে সেটা একটি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকেই করে থাকে। তবে যখন একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে যায় তখন কিন্তু সেই প্রতিষ্ঠানটি রাজনৈতিক দলের কোনো প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিলক্ষিত হয়না। এটি একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা শুরু করে। এখানেই জনগণের বড় একটি টাকা জমা হবে। সেটা যেন কোনোভাবেই লুণ্ঠন করা না হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শিগগিরই আইন বিধি প্রণয়ন এবং পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে অর্থ বিভাগ।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত