কী শাস্তি পেতে যাচ্ছেন সাকিব

| আপডেট :  ১১ জুন ২০২১, ০৯:৩২  | প্রকাশিত :  ১১ জুন ২০২১, ০৯:৩২

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএলে) অবিশ্বাস্য একটা ঘটনার জন্ম দিলেন সাকিব আল হাসান। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অখুশি হয়ে তিনি স্টাম্প ছুড়ে মারেন, লাথি দিয়ে ভেঙে ফেলেন! আম্পায়ার, দর্শক এমনকী খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গেও বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। আজকের আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে সাকিবের এমন কাণ্ড মাঠে বসে দেখেছেন ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিসিডিএমের কর্তারা। এটা নিশ্চিত যে, সাকিব তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য শাস্তি পেতে যাচ্ছেন।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এই ঘটনাবহুল ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত সাকিবের মোহামেডান জিতেছে ৩১ রানে। সেই জয়-পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছেন সাকিব। ম্যাচ শেষে বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএম প্রধান কাজী ইনাম বলেন, ‘খেলার মাঠে অনেক কিছুই হয়। আজকে আবাহনী-মোহামেডানের খেলা ছিল এবং এখানে বেশ উত্তেজনা ছিল, কিছু ঘটনাও ঘটেছে। সাকিব আল হাসানকে আমরা দেখতে পেয়েছি। এটা ফেসবুক লাইভ এবং ইউটিউব লাইভেও ছিল। তাই আপনারা সবাই দেখতে পেয়েছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’

সাকিব ইতোমধ্যেই নিজের কৃতকর্মের জন্য আবাহনীর কোচ সুজনের কাছে ও সোশ্যাল সাইটে ক্ষমা চেয়েছেন। তার শাস্তি বিষয়ে কাজী ইনাম বলেন, ‘ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে উত্তপ্ত একটি মুহূর্ত এসে যেতে পারে, কিন্তু আমরা আশা করি, সবসময় খেলোয়াড় তাদের মেজাজ ধরে রাখবে। যাই হোক, এটা স্বীকৃত ম্যাচ, এখানে নিয়ম আছে। ম্যাচ রেফরি, আম্পায়ার্স, তারা একটা রিপোর্ট দিবেন। আশা করছি, আজ তাদের রিপোর্ট আসবে। সব রুলস কিন্তু আছে, কোনো নিয়ম ভাঙলে নিয়ম অনুযায়ীই সব হবে।’

সাকিবের এমন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন ইনাম, ‘ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। ক্রিকেটে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কখনও তার সিদ্ধান্ত আপনার পছন্দ নাও হতে পারে, কিন্তু খেলাটা তো চালিয়ে যেতে হবে। আমি জানি না সিদ্ধান্ত কী ছিল তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ম্যাচের মধ্যে অনেক সময় কোনো কারণে খেলোয়াড় উত্তেজিত হয়ে যেতেই পারে, কিন্তু তাদের সবার বিশেষ করে সিনিয়র খেলোয়াড়দের অবশ্যই মেজাজ ধরে রাখতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকের ম্যাচে সেটা হয়নি। এরা সবাই পেশাদার খেলোয়াড়, আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। আজ যা হলো ভালো কোনো উদাহরণ নয়।’

ঘটনার শুরু আবাহনীর ইনিংসের পঞ্চম ওভারের। আবাহনীর মুশফিকের কাছে একটি করে চার-ছক্কা হজমের পর শেষ বলটা দারুণভাবে ভেতরে ঢুকিয়েছিলেন মোহামেডানের অধিনায়ক সাকিব। ব্যাটসম্যান মুশফিক পরাস্ত হন। এলবিডাব্লিউর জোরালো আবেদন উঠলেও নাকচ করে দেন আম্পায়ার। সাদা চোখে সেটাকে এলবিডাব্লিউ বলেই মনে হয়েছিল। এরপর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে ক্ষেপে গিয়ে লাথি মেরেই স্টাম্প ভেঙে ফেলেন সাকিব! পরের ওভার শেষে ফের স্টাম্প তুলে আছাড়ও মারেন!

পরের ওভারেই বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। একসময় আম্পায়ারকে আঙুল তুলে শাসাতে দেখা যায় সাকিবকে। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সাকিবসহ বাকি ক্রিকেটাররা মাঠ ছাড়ছিলেন। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে সাকিবকে উদ্দেশ করে গালি দেন আবাহনীর কয়েকজন সমর্থক। সাকিবও তাদের পাল্টা গালি দেন। এ সময় আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন সাকিবের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নিতে পারেননি। তিনি রাগে গজগজ করছিলেন।

সাকিব যখন আবাহনীর সমর্থকদের বকা দিচ্ছিলেন, তখন তার দিকে তেড়ে যান সুজন। তখন সুজনের সঙ্গে সাকিবের কথা কাটাকাটি লেগে যায়। খালেদ মাহমুদ সুজন ভেবেছিলেন, সাকিব তাকে উদ্দেশ করে কটু কথা বলেছেন। কিন্তু সুজনকে পরে সাকিব বোঝানোর চেষ্টা করেন যে আবাহনীর সমর্থকরা গালি দেওয়ায় তিনি তাদের পাল্টা বলেছিলেন। সুজনকে কিছু বলেননি। এরপর দুজনকেই নিজ নিজ দলের ক্রিকেটার ও স্টাফরা টেনে আলাদা করে। এরপর অবশ্য সাকিব আবাহনীর ড্রেসিংরুমে গিয়ে সুজনের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত