নাগেশ্বরীতে বন্যা আতঙ্কে অপরিপক্ক পাট কাটছে কৃষকরা

| আপডেট :  ০৪ জুলাই ২০২১, ০৭:০৬  | প্রকাশিত :  ০৪ জুলাই ২০২১, ০৭:০৬

নূর-ই-আলম সিদ্দিক, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) থেকে: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানী ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা আতঙ্কে নদী তীরবর্তী নিন্মাঞ্চলে পাট নামক সোনালী আঁশ চাষীদের সোনার স্বপ্নগুলো আজ বিবর্ণ হতে চলছে। এই বুঝি আসবে বন্যা এই বুঝি ডুবে যাবে তাদের স্বপ্ন মাখানো সোনালী আঁশগুলো। এমন আতঙ্কের মাঝে বন্যার কবল থেকে তাদের পাটক্ষেত গুলো অপরিপক্ক অবস্থায় কেটে ফসল উৎপাদনের ব্যয়টুকু ঘরে তুলতে টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে পাট কাটছেন অনেকেই। এতে বিঘা প্রতি ৩-৪ মণ পাট কম হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পাটচাষীরা। অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে-এক বিঘা জমিতে পাট বপন করা থেকে শুরু করে পরিপক্ক হতে সময় লাগে প্রায় ৪ মাস। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদন হয় ১০-১২ মণ। বর্তমানে প্রতি মণ পাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার টাকা দরে। এক বিঘা জমিতে পাটচাষে সব মিলে ব্যয় হয় ৬-৭ হাজার টাকা। জমি থেকে আগাম পাট কাটার কারণে বিঘাতে ৩-৪ মণ পাট কম হতে পারে।

সরেজমিনে কচাকাটা থানার কেদার ইউনিয়নের কাজিয়ারদারা দোলায় পাট কাটারত অবস্থায় জানতে চাইলে পাটক্ষেতের মালিক হামিদুল ইসলাম জানান- জানি এই মহুর্তে পাটের ছালগুলো এখনো শক্ত হয়নি। ক্ষেতে পানি উঠেছে। এ অবস্থায় কিছুদিন পানি থাকলে পাট গাছের গোড়া পঁচে গিয়ে সব গাছ মরে যাবে। তাই কাটতেছি।এতে খুউব বেশি লাভ না হলেও লস্ তো আর হবেনা। একই ইউনিয়নের শিবেরহাট গ্রামের আজিবর রহমান বলেন- নিচু জায়গা। গতবারের আগাম বন্যা কাটমো কাটমো করি এমন ভাবে বন্যা আসিল্ আর পাট কাইটপের পাই নাই। একবারে পঁচি শেষ হয়য়া গেইছে। এবার বন্যা আসার আগোতে কাটলং, পাটা না পাই নাই- খড়ি তো হইবে। উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের তরীরহাট এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন- পাশেই নদী! কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নদীসহ এলাকার নিচু জায়গা সব বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে। ক্ষেতে পানি উঠেছে। আর একটু পানি বাড়লে আর পাট কাটতে পারবোন। তখন আসোলো যাবে- লাভো যাবে।

এতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রভাব ফেলতে পারে কি’না তা জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহরিয়ার হোসেন বলেন- পাট উৎপাদনে ২২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে-যা অর্জিত হয়েছে। এর মধ্য থেকে এযাবত ১৩ হেক্টর জমি থেকে পাট কর্তন করা হয়েছে। আর যে সমস্ত পাট অপরিপক্ক অবস্থায় কাটা হচ্ছে তা পরিমানে খুব কম। এর কারণে ফসলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবেনা।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত