ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের কমিটি: আলোচনায় ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা
ছাত্রদলের সুপার ইউনিটখ্যাত ঢাকা মহানগর পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণের কমিটি নিয়ে চলছে একেবারে শেষ পর্যায়ের তোড়জোড়। কোরবানির ঈদের আগেই এসব কমিটি ঘোষণা করতে চায় কেন্দ্রীয় সংসদ। এজন্য দফায় দফায় বৈঠক করছেন দায়িত্বশীল নেতারা। খোঁজ নিচ্ছেন প্রত্যেক পদপ্রত্যাশীর। এসব শেষ করেই খুব অল্প সময়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই চার ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে। এর আগে, গত ১৬ জুন মেয়াদোত্তীর্ণ ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ছাত্রদল। ওই সময় বিএনপির এ ছাত্র সংগঠনটি জানায়, প্রতিটি ইউনিটকে সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত ও গতিশীল করে গড়ে তোলার জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
সূত্র জানায়, আন্দোলন সংগ্রামের নিউক্লিয়াস হিসেবে বিবেচিত ঢাকা মহানগর আগামীর যে কোনো আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বিবেচনায় রাজপথের ত্যাগী ও যোগ্যদের নেতৃত্বে আনার পরামর্শ দিয়েছেন ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার নির্দেশনায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদও চায় চার ইউনিটে পরিচ্ছন্ন নেতা বেছে নিতে।
কিন্তু এর মধ্যে বিভিন্ন সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে তাদের পছন্দমতো কমিটি গঠনের জন্য ছাত্রদল নেতাদের চাপ সৃষ্টি করছেন। আবার ছাত্রদলের সুপার ফাইভ কমিটিরও দুই-একজন নেতা ওই সিন্ডিকেট নির্ভর রাজনীতির কারণে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে প্রাধান্য দিতে ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে বাধ্য করতে চাইছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসব বিষয়ে একজন নেতা জানান, যতই চাপ প্রয়োগ করা হোক আমরা অন্যায়ের কাছে মাথানত করব না।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, নতুন কমিটিতে থাকবে চমক। মহানগরকেন্দ্রিক রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এমন নেতাদেরই মূল্যায়ন করা হচ্ছে। জানা গেছে, পূর্ব-পশ্চিম ও উত্তর-দক্ষিণে আহ্বায়ক কমিটি হওয়ার খবরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। এসব ইউনিট কমিটিতে পদপ্রত্যাশী হিসেবে অনেকেই আলোচনায় রয়েছেন।
মহানগর পূর্ব: ঢাকার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট মহানগর পূর্ব। কারণ এই ইউনিটের মধ্যে রয়েছে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, প্রেসক্লাব, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। বিএনপির যে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই ইউনিটের গুরুত্বও অনেক। এজন্য এ ইউনিটকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে চায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
এ সাংগঠনিক ইউনিট কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আগের কমিটির সহ-সভাপতি শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি, রাফিজুল হাসান রাফিজ আলোচনায় রয়েছেন। এর মধ্যে জ্যাকির বিরুদ্ধে ২২টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনায় আছেন আল আমিন, আব্দুল্লাহ জামাল চৌধুরী আদিত্য এবং মো. শাকিল হোসেন চৌধুরী।
মহানগর পশ্চিম: ঢাকা মহানগর পশ্চিমে আলোচনায় রয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাযহারুল ইসলাম মারুফ। এর আগে মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। আলোচনায় রয়েছেন আমিনুর রহমান শান্ত। এছাড়া এই ইউনিটে সদস্য সচিব হিসেবে আদাবর থানার সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, জুয়েল হাসান রাজ, তারিকুল ইসলাম রানা এবং মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মামুনের নাম আলোচনায় রয়েছে।
মহানগর উত্তর: উত্তরে আলোচনায় রয়েছেন মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জসিম শিকদার রানা ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বাবু। এরপরে রয়েছেন পলিটেকনিক কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১২টি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। তিনবার কারাবরণ করেছেন তিনি।
মহানগর দক্ষিণ: মহানগর দক্ষিণে আলোচনায় এগিয়ে আছেন ডেমরা থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজ মাহমুদ। এরপরে উঠে আসছে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি পাভেল শিকদার রানার নাম। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের সদস্য। সদস্য সচিব হিসেবে আলোচনায় আছেন ওয়ারী থানার সাবেক আহ্বায়ক আব্দুর রহিম ও সাবেক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের নাম।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত