সেনা প্রত্যাহার হলেও কাবুলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ছিন্ন না করার আহ্বান

| আপডেট :  ১০ নভেম্বর ২০২১, ১১:৫৭  | প্রকাশিত :  ১০ নভেম্বর ২০২১, ১১:৫৭

আফগানিস্তানে মানবিক পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হতে থাকায় কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ সংকট কাটাতে দেশটিতে তাদের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএনআই।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক পলিটিকোর একটি মতামতধর্মী লেখায় আফগানিস্তানের বৃহত্তম মিডিয়া গ্রুপ মবির চেয়ারম্যান এবং সিইও সাদ মোহসেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হয়তো আফগানিস্তানের কথা ভুলে যেতে চাইতে পারেন। কিন্তু অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আফগান জনগণের পাশে ওয়াশিংটনকে বেশি প্রয়োজন।

মোহসেনি আরও বলেন, আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে মানেই যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নয় যে তাদের সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্কও বিচ্ছিন্ন করা। বরং ওয়াশিংটনের উচিত কূটনীতিক সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা এবং তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সতর্ক করা। সেই সঙ্গে ভুগতে থাকা সাধারণ আফগানদের পাশেও বাইডেন প্রশাসনের দাঁড়ানো উচিত বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যদি সাধারণ আফগানদের পাশে না দাঁড়ায় তবে তালেবানের অপশাসন থেকে বাঁচতে দেশটি থেকে ইউরোপের দিকে শরণার্থীদের ঢল আরও বাড়বে। বিশ্বের অন্যতম মাদক উৎপাদনকারী দেশ থেকে অসহায় শরণার্থীদের আগমন মাদক পাচারকারীদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। ফলে এই আফগান জনস্রোত শুধু শরণার্থী সমস্যাই বাড়াবে না, মাদকের মতো মারাত্মক সমস্যায়ও ফেলবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে।

এ বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে গ্রুপ মবির চেয়ারম্যান এবং সিইও সাদ মোহসেনি বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে বিপুলসংখ্যক আফগান ইউরোপের যেকোনো উন্মুক্ত সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করছে। কারণ তাদের প্রধান উদ্বেগ- আফগানিস্তানে থাকলে হয়তো তাদের না খেয়ে অথবা গুলি খেয়ে মরতে হতে পারে। তাই, মাদক চোরাচালানকারীরা ইরান ও তুরস্কের মধ্য দিয়ে যে পথ ব্যবহার করে, সেই একই পথ ধরে তারা উত্তর দিকে যাত্রা করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে ইউরোপের জন্য, মাদক সমস্যা ও শরণার্থী সমস্যা দুইই বাড়ছে।’

সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশটিতে সংঘাতের কারণে নিহত হয়েছে অন্তত ৪৬০ শিশু। এ ছাড়া জাতিসংঘ বলেছে, দেশটিতে ব্যাপক খাদ্যঘাটতি হয়েছে, বেড়েছে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা। সেই সঙ্গে ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ সতর্ক করছে, আফগানিস্তানে দেখা দেওয়া সাম্প্রতিক এই বিশৃঙ্খলার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে খরা, গণহারে লোকজনের বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ও অর্থনৈতিক অচলাবস্থা। সব মিলিয়ে সম্ভাব্য মানবিক বিপর্যয় প্রতিরোধে দেশটিতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি তৎপরতা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত