ইউক্রেন সংকট সমাধানের লক্ষ্মণ নেই
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে যাচ্ছে, এমন অভিযোগে অনড় কিয়েভ ও এর পশ্চিমা মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে রাশিয়া ওই অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বলে এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোর গলায় কথা বলে যাচ্ছে। নিজ নিজ বক্তব্যে দুই বিশ্বশক্তির অনড় অবস্থানের জেরে বিতণ্ডার পরিধি আর উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র তার দেশকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেন সংকট নিয়ে নিজের প্রথম তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যে পুতিন আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হচ্ছে রাশিয়ার ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের অজুহাত হিসেবে সংঘাতকে ব্যবহার করা। রুশ প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, ইউরোপে ন্যাটো বাহিনীর উপস্থিতি নিয়ে রাশিয়ার যে উদ্বেগ, সেটা উপেক্ষা করছে যুক্তরাষ্ট্র
মস্কোতে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সঙ্গে আলোচনার পর পুতিন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ততটা উদ্বিগ্ন নয়, …রাশিয়ার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ইউক্রেন একটি হাতিয়ার মাত্র।’ তারপও পুতিন আশা করেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমরা হয়তো সমাধান খুঁজে পাব, যদিও সেটা সহজ হবে না।’
ওয়াশিংটন-ক্রেমলিন বিতণ্ডার মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, এমনটা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার ওই দেশ সফর করেন জনসন এবং গতকাল পুতিনের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ হওয়ার কথা। ইউক্রেন সফরকালে জনসন বলেন, ইউক্রেন সীমান্তে জড়ো হয়ে থাকা রুশ সেনারা ‘স্পষ্ট ও মূর্তিমান বিপদ’।
এদিকে পুতিন-জনসন ফোনালাপের আগেই এক রুশ কূটনীতিক মন্তব্য করেন যুক্তরাজ্যের কূটনীতির ওপর রাশিয়ার ভরসা নেই। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার ডেপুটি রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি গতকাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘কূটনীতিকর দরজা সবসময় খোলা। কিন্তু সত্যি বলতে কী, ব্রিটিশ কূটনীতিতে আমাদের কোনো আস্থা নেই।’
ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রুশ সেনা মোতায়েনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাশিয়া সেখানে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। এ ছাড়া ট্যাংক এবং কামান থেকে শুরু করে গোলাবারুদ, বিমানশক্তি-সব কিছুর সমাবেশ করা হয়েছে। যুদ্ধাহত সেনাদের জন্য রক্তের সরবরাহও নিশ্চিত করে রেখেছে রাশিয়া, মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে এমন খবর জানিয়েছে রয়টার্স। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেনের আক্রমণের পরিকল্পনা করার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। সূত্র: এএফপি, বিবিসি।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত