নাজাতের দশ দিন: রাতগুলো কাজে লাগাতে হবে
চোখের পলকেই চলে গেল ১৯টি দিন। আর যে কটি দিন আছে, যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। রমজান আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমা ও অশেষ প্রাপ্তির মাস হয়ে।
চোখের পলকেই চলে গেল ১৯টি দিন। আর যে কটি দিন আছে, যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। রমজান আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমা ও অশেষ প্রাপ্তির মাস হয়ে।
রোজা, তারাবিহ, সেহরি, ইফতার, ইতিকাফ, সদকাহসহ সব ধরনের আমলের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে আঁচল ভরে রহমত দান করেন।
আশা করি, আমরা খোদার দানের উপযুক্ত হয়েছি। এজন্য রমজানে যেসব আমল শুরু করেছি, অন্য সময়ও যেন আমলগুলো আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়-এ চেষ্টা করতে হবে। সামনে যেন আগের কোনো গুনাহের পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।
অসুস্থ ব্যক্তির রোগের মাত্রানুযায়ী যেমন তার চিকিৎসা চালানো হয়, তেমনই মানুষের ভেতরের জগৎকে সুস্থ ও পরিপাটি রাখতে রমজানের সময়কে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
রমজানের প্রথমভাগে মুমিন তার গুনাহ ও কৃতকর্মের হিসাব মিলিয়ে এসব ছাড়ার প্রস্তুতি নেবে। যখনই তার জীবন গুনাহমুক্ত হওয়ার পথে এগোবে, শুরু হয়ে যাবে মাগফিরাতের বসন্তকাল। খোদার মাগফিরাতে নিজেকে সিক্ত করে বান্দা রমজানের শেষের দিক এসে পড়বে, তখন আসবে তার সামনে ক্ষমার ঘোষণা। সিয়াম সাধনার পুরস্কার হিসাবে আল্লাহ বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতের সুসংবাদ দেবেন।
এ ধারাবাহিকতা হলো যারা নিজেকে আকণ্ঠ পাপে নিমজ্জিত রেখেছেন তাদের জন্য। যাদের জীবন শুরু থেকেই সুন্দর ও উন্নত, তাদের জন্য পুরো রমজানই রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতে ভরপুর থাকে।
আজ পবিত্র এ মাসের দ্বিতীয় দশকও শেষ হয়ে আমরা তৃতীয় দশকে শেষভাগে উপনীত হচ্ছি । রমজানের শেষ দশকে নবিজি (সা.) ইবাদতের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। সারা রাত জেগে ইবাদত করতেন এবং স্বীয় পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন (সহিহ মুসলিম)।
পবিত্র রমজানের শেষ দশক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদার। এ দশকের প্রতিটি রাত একটুও না ঘুমিয়ে জেগে ইবাদত-বন্দেগি করা হচ্ছে নবিজির অন্যতম সুন্নত। তবে কর্মব্যস্ত লোকেরা দিনের বেলায় পরিশ্রম করার কারণে রাত জাগতে পারেন না। তাদের জন্য এমন কিছু আমল রয়েছে-যেগুলো করলে সারা রাত না জেগেও আমল করার পূর্ণ সওয়াব মেলে।
এশা, তারাবিহ ও ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা: নবিজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে এশা ও তারাবিহ নামাজ পড়ে এবং ইমাম নামাজ শেষ করে চলে যাওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করেন, আল্লাহতায়ালা ওই ব্যক্তিকেও সারা রাত দাঁড়িয়ে ইবাদত করার সমান সওয়াব দান করেন।’ (আবু দাউদ)
রাত জেগে ইবাদত করার নিয়ত করে ঘুমাতে যাওয়া : যে ব্যক্তি এ নিয়তে বিছানায় ঘুমাতে যায়, তিনি রাতে উঠে ইবাদত-বন্দেগি করবেন। কিন্তু বিছানায় ঘুমানোর পর তার ঘুম এত ভারি ও প্রবল ছিল যে, সে আর জেগে ইবাদত করতে পারেনি। ঘুমেই তার রাত অতিবাহিত হয়ে গেছে। সে ব্যক্তিও রাতে জেগে ওঠে ইবাদত-বন্দেগির নিয়তের কারণে সারা রাত জেগে ইবাদত করার সওয়াব পাবেন। আর এ ব্যক্তির জন্য রাতের ঘুমটি হবে আল্লাহর পক্ষ থেকে সদকাহ বা উপহার।
১০০ আয়াত তেলাওয়াত করা : নবিজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রাতে ১০০টি আয়াত তেলাওয়াত করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে সারা রাত ইবাদতের সমান সওয়াব দান করবেন। (সহিহুল জামে)
আল্লাহতায়ালা আমাদের এ সহজ আমলগুলো করে রমজানের শেষ দশকের পূর্ণ সওয়াব হাসিল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
লেখক:
মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক বাংলা পোস্ট,
বিশেষ প্রতিবেদক দৈনিক নয়াদেশ,
ও প্রকাশক বাংলাদেশ জ্ঞান সৃজনশীল প্রকাশনা।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত