‘আগুন নিয়ে খেলবেন না ‘, বাইডেনকে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি জিংপিংয়ের
বৃহস্পতিবার দুই ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলা একটি ফোন কলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সতর্ক করলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং। তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে দুই দেশের সম্পর্ক। এই পরিস্থিতিতে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ফোনালাপের দিকে নজর ছিল সকলেরই।
জিংপিং কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বাইডেনকে বলেন, যারা আগুন নিয়ে খেলে, শেষ পর্যন্ত নিজেরাই আগুনে পুড়ে যায়। এরই মধ্যে হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির আগামী মাসে তাইওয়ান দ্বীপে সম্ভাব্য সফর নিয়ে উত্তেজনা তৈরী হয়েছে । একটি চীনা বিবৃতি অনুসারে শি জিংপিং বলেছেন , ”যারা আগুন নিয়ে খেলবে তারা সেই আগুনেই ধ্বংস হবে। আশা করা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে পরিষ্কার দৃষ্টি রাখবে।
সেইসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রপতি বলেন, ”তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের অবস্থান একই রকম দৃঢ়। চীনের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে আমরা স্থিতসংকল্প।” তাইপেইকে প্রকাশ্যে সমর্থন করা থেকে ওয়াশিংটনকে নিরুৎসাহিত করার জন্য শি- এর এই ধরনের ভাষা ব্যবহার প্রথম নয়। গত নভেম্বরে, শি একটি ভার্চুয়াল সামিটে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সতর্কও করেছিলেন যে, তাইওয়ান যদি বেইজিংয়ের লাল রেখা অতিক্রম করে স্বাধীনতার দিকে কোনও পদক্ষেপ নেয় তবে চীন “নির্ধারক ব্যবস্থা” নিতে প্রস্তুত থাকবে ।
তাইওয়ান সম্পর্কে শির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন ওয়াশিংটনের নীতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, এটি পরিবর্তিত হয়নি এবং যুক্তরাষ্ট্র স্থিতাবস্থা পরিবর্তন বা তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার একতরফা প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করে। বৃহস্পতিবারের ফোন কল নিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি, কারিন জিন-পিয়েরে বেশি কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু এটুকুই জানান, বাইডেন এবং শির মধ্যে সোজাসুজি কিছু কথাবার্তা হয়েছে , যা সবসময়েই দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে হয়ে থাকে ।
বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে এসেছে চীন । তবে বেজিংয়ের ক্ষমতার রাশ শি জিংপিংয়ের হাতে আসার পর থেকেই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে দেশটি। একাধিকবার জোর করে তাইওয়ান দখলের কথাও বলেছেন প্রেসিডেন্ট শি। এই অবস্থায় জিংপিংকে কার্যত হুমকি দিতে দেখা গেল বাইডেনকে।
এদিকে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলেছে যে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করবে । তাইওয়ান বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে বাধ্য করার জন্য গত দুই বছরে চীনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির অভিযোগ করেছে। এর আগেও ১৯৯৭ সালে, চীন তৎকালীন স্পিকার নিউট গিংরিচের তাইওয়ান সফর সম্পর্কে অভিযোগ করেছিল। বিশ্লেষকরা উদ্বিগ্ন যে এই বছরের শেষের দিকে চীনের রাষ্ট্রপতি হিসাবে শি তাঁর তৃতীয় মেয়াদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তিনি এই ধরনের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় সর্বদাই নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে চাইবেন । ইউরেশিয়া গ্রুপের একজন সিনিয়র বিশ্লেষক এবং আমেরিকার গ্রেট-পাওয়ার সুযোগের লেখক আলী ওয়াইন বলেছেন, দুই নেতার ফোনকল অন্তত তাইওয়ানের উপর ভুল পদক্ষেপ এড়াতে কিছুটা হলেও কাজ করবে।
সূত্র : গার্ডিয়ান
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত