হু ইজ পরীমনি, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

| আপডেট :  ১৬ জুন ২০২১, ০৭:২৩  | প্রকাশিত :  ১৬ জুন ২০২১, ০৭:২৩

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে চিনেন না বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বললেন, হু ইজ পরীমনি? ফখরুল বলেন, ইস্যুটা হচ্ছে পরীমনি। সরকারের আবার সেই ডাইভারশন, আবার সেই অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া। প্রতি মুহূর্তে জনগণকে বিভ্রান্ত করা, প্রতারণা করা, মিথ্যাচার করা -এটাই হচ্ছে তাদের (ক্ষমতাসীন দল) মূল কাজ। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করবে, মানুষকে ভুলপথে নিয়ে যাবে। পরীমনি ইস্যুকে সরকার সামনে নিয়ে এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, খুব লাফালাফি হচ্ছে এখন। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জনগণকে বিভ্রান্ত করার কারণ তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন যখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, তার মুক্তি নিয়ে কথা উঠছে, যখন দেশের গণতন্ত্র নিয়ে কথা উঠছে, যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চরম ব্যর্থতা নিয়ে কথা উঠছে, তখন আবার একটা এদের (পরীমনি) নিয়ে ডাইভারশন করা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা, খেলা- এটা আওয়ামী লীগের পক্ষে সম্ভব। এ রকম কৌশল করেই তারা সমস্ত জাতিকে দমন করে রাখছে। তারা প্রতারক সরকার, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেই এভাবে ক্ষমতায় বসে আছে।

চিত্রনায়িকা পরীমনির দায়েরকৃত মামলা প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি জানি না কী সত্য, কী ঘটনা, না ঘটনা। কিন্তু এই ঘটনাটা দেখে মনে হয়েছে যে, এভরিথিং ইজ পোসিবল ইন দিস কান্ট্রি। মামলা করল একটা আর আরেক ঘটনার অপরাধের দায়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে ৮ দিন রিমান্ডে। আমি বুঝিনি, সত্যি বলছি আমি বুঝতে পারিনি ব্যাপারটা। আপনারা মামলা করলেন ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টা। আর তাকে (আসামি নাসির উদ্দিন) যখন নিয়ে যাচ্ছেন রিমান্ডে কী জন্য যে, তার কাছে মাদক পাওয়া গেছে। যেখান থেকে তাকে অ্যারেস্ট করেছে সেই বাড়িটিও তার নয়, এটা আরেক জনের বাসা। আমার কাছে এসব বোধগম্য নয়।

তিনি বলেন, আজকে অনেক প্রশ্ন এসছে। তাহলে কি শুধুমাত্র ক্ষমতাসীনরা, ক্ষমতাধারীরা যা চাইবেন তাই হবে? এই প্রশাসন যাকে ইচ্ছা, যাকে খুশি তাকেই তুলে নিয়ে যাবে। তার সম্মান, ইজ্জত, তার পরিবারের কাছে ইজ্জত, সমাজের কাছে ইজ্জত সমস্ত কিছু ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

কোনো বিরোধী দলই সরকার চায় না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন যে, বিএনপির সঙ্গে একসঙ্গে বাস করা যায় না। তার এই বক্তব্যে তাদের আসল যে চরিত্র, তাদের আসল যে মানসিকতা সেটা বেরিয়ে এসেছে। তারা শক্তিশালী বিরোধী দল তো দূরের কথা, কোনো বিরোধী দলই চায় না। তার এই বক্তব্য থেকে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- বিএনপি কারও দয়ার দল না। বিএনপি কারও দয়াতে টিকে নাই। বিএনপি সম্পূর্ণভাবে অস্তিত্ব নিয়ে টিকে আছে জনগণের ভালোবাসা ও জনগণের সমর্থন নিয়ে। এই কথাটা অবশ্যই সরকারকে মনে রাখতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে যে অবস্থাটা সরকার তৈরি করেছে। মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে, খুন করেছে। ৩৫ লাখ গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এজন্য অবশ্যই আওয়ামী লীগের একদিন বিচার হবে, জনগণই তাদের বিচার করবে।

সারা দেশে সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন নির্যাতনের জন্য সরকার ও প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেন মির্জা ফখরুল।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস’ উপলক্ষে এই গোল টেবিল আলোচনা হয়।

স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য সচিব শ্যামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল হাই শিকদার, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, দৈনিক দিনকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, বিএফইউজের একাংশের সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ প্রমুখ।

 

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত