চলমান কঠোর লকডাউনের সময় যে কারণে বাড়াল
করোনা সংক্রমণের ঊর্দ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে কঠোর লকডাউন দিয়েছিল সরকার। এর আগে ১ জুলাই থেকে চলমান এই লকডাউন শেষ হবে ৭ জুলাই। তার আগেই সর্বাত্মক লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা এল। দেশে আবারও কঠোর বিধিনিষেধের সময়সীমা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে করেছে বাংলাদেশ সরকার। লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
আজ সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ বুলেটিনে এ তথ্য পাওয়া যায়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে ১৪ জুলাই মধ্যরাত (১২টা) পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ আরোপের সময়সীমা বাড়ানো হলো।
ঈদুল আযহা সামনে রেখে বিধিনিষেদের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ সাধুবাদ জানিয়েছেন। আবার যারা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু-ছাগল লালন পালন করছেন তাদের মনে শঙ্কা ভর করেছে। নতুন ঘোষিত লকডাউন শেষ হবে ১৪ জুলাই। এরপর ঈদের এক সপ্তাহেরও কম সময় হাতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে কোরবানির পশুর বাজার জমকে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে খামারি-চাষীরা।
এরআগে, কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়াতে ইতিমধ্যে সুপারিশ করেছিল কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। রোববার (৪ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম ইকবাল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা আগেই কমপক্ষে দুই সপ্তাহ লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। সুপারিশে আমরা বলেছিলাম করোনার সুফল পেতে হলে তিন সপ্তাহ লকডাউন আইডিয়াল, না হলে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ লকডাউন দিতে হবে।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর সংখ্যা এখনো একশ’র বেশি। তাই বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।’
এরআগে ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এ নিয়ে গত ৩০ জুন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। লকডাউনে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল-দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তবে শিল্প-কারখানা খোলা থাকলেও জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না এই সময়ে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী।
এদিকে করোনায় দেশে আরও ১৬৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। শনাক্ত ৯ হাজার ৯৬৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ হাজার ২২৯ জনে। মোট শনাক্ত ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৮৮১ জন। আজ সোমবার (৫ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত ১ জুলাই ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়। এর পর ২ জুলাই ১৩২ জন, গতকাল ৩ জুলাই ১৩৪, ৪ জুলাই ১৫৩ জন, ২৭ জুন ১১৯ জন, ৩০ জুন ১১৫ জন, ২৯ জুন ১১২ জন আর ২৮ জুন ১০৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত