সোনারগাঁ সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত

| আপডেট :  ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:২৮  | প্রকাশিত :  ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:২৮

আল আমিন কবির, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ: সোনারগাঁও সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে

শুক্রবার (১৭ (মার্চ) সকালে সোনারগাঁ সরকারী কলেজে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর দোয়া মাহফিল ও কেক কেটে উদযাপন করা হয় এই মহা নায়কের জন্মদিন।

এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবির আহমেদ ও মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান রক্সি, জাহিদ হাসান ভিপি,র সঞ্চালনায় আশিকুর রহমানের তত্ত্বাবধানে কলেজ ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী ও ছাত্রচাএী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন

এসময় মাহবুবুর রহমান রক্সি বক্তব্য কাল বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজাপীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন। গ্রামের হিন্দু-মুসলমানদের সম্মিলিত সম্প্রীতির সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িক চেতনার। কিশোর বয়সেই রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে, তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর থেকে শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা।

বঙ্গবন্ধু সারাজীবন এদেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪ বছর পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থেকেছেন। দুইবার ফাঁসির মঞ্চে হয়েছেন মৃত্যুর মুখোমুখি। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকারের প্রশ্নে কখনো মাথা নত করেননি।

দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় বঙ্গবন্ধু তার সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠন করেন। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪- এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২- এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬- এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

বঙ্গবন্ধুর সাহসী ও আপোষহীন নেতৃত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। যেখানে তিনি ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার পর দেশজুড়ে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু।

এরপর নয় মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশ্বমানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা।

বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও ১৯৭৫ সালে এ জাতির ভাগ্যে নেমে আসে আরেকটি কালরাত্রিতে। ওই বছরের ১৫ আগস্ট বিশ্বাসঘাতকদের নির্মম বুলেটে সপরিবারে নিহত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তানি ভাবধারার মূল্যবোধের বিস্তার ঘটানোর পাঁয়তারা চালায়। ইতিহাসের পাতা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে শুরু করে নানা ষড়যন্ত্র। কিন্তু তার সংগ্রাম ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার জন্য তা মুছে ফেলতে পারেনি। বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, বঙ্গবন্ধু একইভাবে প্রজ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে, মুক্তিকামী ও শান্তিকামীর হৃদয়ে।

তাইতো কবি লিখেছেন-‘যতকাল রবে পদ্মা, মেঘনা গৌরী, যমুনা বহমানততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত