ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে যে কারণে ভয় পাচ্ছে ন্যাটো ও ইউরোপ

| আপডেট :  ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০২  | প্রকাশিত :  ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:০২

২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে জো বাইডেনের বেহাল দশা দেখে আতঙ্কিত উত্তর আটলান্টিক সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাদের আশঙ্কা, ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট হলে ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দূরত্ব বাড়বে। একইসঙ্গে নতুন করে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে পড়বে ইউরোপ।

প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ট্রাম্প একাধিকবার ন্যাটো থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছিলেন। তার দাবি ছিল, আমেরিকা যে তাদের সুরক্ষা দিচ্ছে, তার জন্য ইউরোপকে অর্থ দিতে হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনায় ট্রাম্প এক নির্বাচনী প্রচার সভায় বলেছিলেন ‘ন্যাটোর শরিক দেশগুলো যদি তাদের ভাগের অর্থ (চাঁদা) না দেয়, তাহলে তিনি যা খুশি করার জন্য রাশিয়াকে উৎসাহিত করবেন।’এরপর মার্চে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘জোট (ন্যাটো) সদস্যরা যদি তাদের ন্যায্য অংশ পরিশোধ করে এবং আমেরিকার সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করে তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শতভাগ জোটটির সঙ্গে থাকবে।’ অর্থাৎ এখানে তিনি শর্ত আরোপ করে রেখেছেন-জোটের শরিকদের অবশ্যই তাদের ভাগের অর্থ (চাঁদা) যথাযথভাবে পরিশোধ করতে হবে।

ন্যাটো চুক্তির বহুল আলোচিত পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে, ন্যাটোর কোনো একটি দেশ যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে ইউরোপ ও আমেরিকা সেই আক্রমণকে নিজেদের ওপর আক্রমণ হিসেবে দেখবে, একসঙ্গে তা প্রতিহত করবে। এই মুহূর্তে ইউরোপের মাথাব্যাথার বড় কারণ রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ। এই সময়ে ইউক্রেনকে সবচেয়ে বড় সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর যদি ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একা হয়ে যাবে ইউরোপ। এতে পুরো অঞ্চলের ওপর অর্থনৈতিক ও সামরিক চাপ বাড়বে।

মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসির এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ইউরোপকে আজকের তুলনায় অনেক বেশি সশস্ত্র হতে হবে। অনেক দেশে প্রতিরক্ষা ব্যয় দ্বিগুণ বা তিনগুণ বাড়াতে হবে। ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র-ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান এবং অত্যাধুনিক স্পর্শকাতর সমরাস্ত্রে প্রচুর বিনিয়োগ করবে। মার্কিন পারমাণবিক ছায়া হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে, রাশিয়াকে পরাজিত করার প্রত্যাশী দেশগুলো পারমাণবিক অস্ত্রের সন্ধান করতে পারে।

সাময়িকীটি আরও বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে মুক্ত করতে এবং নিজের পূর্বাঞ্চলীয় রাষ্ট্রগুলোকে রক্ষা করতে সামরিক শক্তি জোরদারে ব্যর্থ হবে। একইসময় পুরো অঞ্চলকে চীনের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক হুমকি মোকাবেলায় লড়াই করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে, ইউরোপ নিজেকে আগ্রাসী রাশিয়া, শিকারী চীন এবং ট্রাম্পের শাসনাধীন শত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘুরপাক খেতে হবে। ইউরোপ হয়তো আর ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারবে না। বিশৃঙ্খল বিশ্বে প্রভাব ও নিরাপত্তা হারাবে তখন ইউরোপ।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত