যে সাজা হতে পারে পরীমণির

| আপডেট :  ০৬ আগস্ট ২০২১, ০৫:০২  | প্রকাশিত :  ০৬ আগস্ট ২০২১, ০৫:০২

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই মামলার সাক্ষ্য প্রমাণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। একইসঙ্গে হতে পারে অর্থদণ্ডও। আরেকটি ধারা অনুযায়ী, ৬ মাস থেকে এক বছর সাজা হতে পারে। নায়িকার বিরুদ্ধে করা এ মামলায় অপরাধ প্রমাণ হলে, সে অনুযায়ী তিনি এ শাস্তি পাবেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টা ২৮ মিনিটে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পরীমনিকে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় পরীমনিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ আসামি পরীমনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাত ৮টা ২৮ মিনিটে আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া মদের বোতলগুলো খালি ছিল এবং কোনো ভরা বোতল তার বাসা থেকে উদ্ধার হয়নি বলে দাবি করেছেন পরীমনির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রেফাত সুরভী। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পরীমনিকে হাজির করা হলে এ দাবি করেন আইনজীবী নীলাঞ্জনা রেফাত সুরভী।

এসময় রিমান্ড শুনানিতে অংশ নিয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল্লাহ আবু বলেন, মামলার আসামি পরীমনির বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়। যার বাজারমূল্য ২ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা। এই মাদক কোথা থেকে আসল? তার উৎস কী? কে এই মাদক পাঠাল? মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, এমন ঘটনায় পরীমনি অত্যন্ত বিব্রত ও লজ্জিত। এতে তার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে বনানীর বাসায় মাদকসহ গ্রেফতারের ঘটনায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে আদালতে নেওয়া হয়। বনানী থানার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় পরীমনিকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সোহেল রানা। আাদালত পরীমনিসহ চারজনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এর বিরোধীতা করেন নিলাঞ্জনা রেফাত সুরভীসহ কয়েকজন আইনজীবী। রেফাত সুরভী বলেন, পরীমনি একজন স্বনামধন্য শিল্পী। আমরা তার জামিনের আবেদন করেছি। তবে আদালত জামিন না-মঞ্জুর করে ৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছে। রিমান্ড বাতিলের জন্য দরখাস্ত করেছি আমরা। কারণ এটি একটি চক্রান্তমূলক মামলা। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই মামলাটি করা হয়েছে। আদালত তার সেই বক্তব্য নাকচ করে দেন।

এর আগে, ‘এজলাসে আসার সঙ্গে সঙ্গে পরীমণির এক আইনজীবী তাকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেন। এ নিয়ে আদালতে হৈ চৈ শুরু হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ এজলাসে ওঠার পর পরীমণির পক্ষে আদালতে লড়তে ওকালতনামায় স্বাক্ষর করা নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কে পরীমনির পক্ষে ওকালতনামা দেবেন তা নিয়ে শুরু হয় ‘তর্কবিতর্ক’। এক পর্যায়ে ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ এজলাস ত্যাগ করেন।’

এজলাস ত্যাগের আগে আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘আগে আপনারা ঠিক করেন, কে আসামি পরীমণির আইনজীবী হবেন। তারপর শুনানি হবে।’

এরপর পরীমণি ঈশারা দিয়ে আইনজীবী নীলঞ্জনা রিফাতকে তার আইনজীবী নিয়োগ করেন। পরে আবার এজলাসে আসেন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে পরীমনির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানির পুরো সময় পরীমনি চুপচাপ ছিলেন। পরে রাত ৯টা ৮ মিনিটের দিকে তাকে আদালত থেকে বের করে ডিবি কার্যালয় নিয়ে যায় পুলিশ।

প্রসঙ্গত, বুধবার বিকাল ৪টার কিছু পর সাদা পোশাকে র‌্যাবের ৩-৪ জন সদস্য পরীমনির বাসায় গিয়ে দরজা খুলতে বলেন। বাইরে অবস্থান নেয় র‌্যাবের পোশাকধারী সদস্যরা। কিন্তু পরীমনি দরজা না খুলে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। উলটো ফেসবুক লাইভে এসে অভিযানে যাওয়া র‌্যাব সদস্যদের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ান। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নানা নাটকীয়তার পর পরীমনিকে নিজেদের হেফাজতে নেয় র‌্যাব।

আরও পড়ুন


  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত