চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের আগে ‘ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে রয়েছেন যারা
ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। ট্রফিটি পাওয়া যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্যই সম্মানজনক। গত দেড় যুগ ধরে ট্রফিটি নিজেদের করে নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বিশেষ ট্রফিটি রেকর্ড আটবার নিজের ঝুলিতে ভরেছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। ৫ ট্রফি নিয়ে তারপরেই রয়েছেন পর্তুগিজ অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
এদিকে ২০২৪-২৫ মৌসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ফলে ব্যালন ডি’অর পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ে এখন রাজত্ব করছে বার্সেলোনা। মৌসুম জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা এবং ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকার সুবাদে জনপ্রিয় কাতালান ক্লাবটির তিনজন ফুটবলারই জায়গা করে নিয়েছেন শীর্ষ চারে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বপ্ন অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এলো বার্সেলোনার দুই ফরোয়ার্ড লামিন ইয়ামাল ও রাফিনহার জন্য। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে নাটকীয় দ্বিতীয় লেগে ৪-৩ গোলে হেরে ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে ছিটকে যায় কাতালানরা।
এই ব্যর্থতার প্রভাব পড়েছে ব্যালন ডি’অরের দৌড়েও। কারণ এবারের মৌসুমে নেই কোনো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট, ফলে ঘরোয়া লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ক্লাব বিশ্বকাপই হয়ে উঠেছে পুরস্কার নির্ধারণের মূল মাপকাঠি। আর এই তালিকায় অনেকটাই এগিয়ে গেছেন ইন্টার মিলানের আর্জেন্টাইন তারকা লাউতারো মার্টিনেজ এবং পিএসজির হয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করা ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড উসমান ডেম্বেলে।
এদিকে, ইয়ামাল ছিলেন ইতিহাস গড়ার পথে। ব্যালন ডি’অরের ৭০ বছরের ইতিহাসে ২১ বছরের কম বয়সী কোনো ফুটবলার এই পুরস্কার জেতেননি। এবার সেই রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা ছিল তরুণ এই স্প্যানিয়ার্ডের সামনে। মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৬ গোল এবং ২৫ অ্যাসিস্ট করে নজর কাড়েন তিনি। তবে দলীয় সাফল্যের ঘাটতি তার স্বপ্নে ছায়া ফেলেছে।
বার্সেলোনার আরেক ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনহাও ছিলেন দারুণ ফর্মে। মৌসুমজুড়ে ৩৫ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট করে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। তবে দলীয় ট্রফির ঝুলিতে শূন্যতা তাকেও ব্যালন ডি’অরের দৌড় থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিয়েছে।
এদিকে সেমিফাইনালের পর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ফুটবলবিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট গোলডটকম। যেখানে শীর্ষ স্থানে রয়েছেন পিএসজির সাবেক বার্সা তারকা উসমান দেম্বেলে। যিনি আগের মাসে ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৩৫ গোল ও ১২ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছেন লিগ শিরোপা ও ট্রফি দে চ্যাম্পিয়নস। এছাড়াও সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের।
র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন বার্সেলোনার তরুণ ফুটবলার লামিনে ইয়ামাল। যিনি আগের মাসে ছিলেন তৃতীয় নম্বরে। তিনি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৬ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট করেছেন। ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছেন সুপারকোপা দে এস্পানিয়া ও কোপা দেল রে’র শিরোপা। সামনে রয়েছে লিগ শিরোপা।
তৃতীয় স্থানে আছেন আরেক বার্সা তারকা ব্রাজিলের রাফিনহা। যিনি আগের মাসে ছিলেন শীর্ষে। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৩৭ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। ইতোমধ্যে সুপারকোপা দে এস্পানিয়া ও কোপা দেল রে’র শিরোপা ঘরে তুলেছেন। সামনে রয়েছে লিগ শিরোপা।
চতুর্থ স্থানে রয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের দল পিএসজির ইতালিয়ান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোনারুম্মা। সেমির দ্বিতীয় লেগের আগে ৪র্থ স্থানে ছিলেন স্পেনের বার্সা তারকা পেদ্রি। তাকে পেছনে ফেলে এ ইতালিয়ান উঠে এসেছেন শীর্ষ পাঁচে। চলতি মৌসুমে ১২টি ম্যাচে ক্লিন শিট রেখেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছেন লিগ শিরোপা ও ট্রফি দে চ্যাম্পিয়নস। এছাড়াও সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের।
চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউটে তিনি পিএসজির হয়ে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। আনফিল্ডে লিভারপুলের বিপক্ষে শেষ ষোলোতে পেনাল্টি শুটআউটে দলের নায়ক ছিলেন তিনিই। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে চার গোলের ঘাটতি কাটানোর লড়াইয়ে ডোনারুম্মা করেন একাধিক গেম-সেভিং সেভ।
সেমিফাইনালে আর্সেনালের বিপক্ষেও দুটি লেগেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন এই গোলরক্ষক। প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগ বারবার বাধা পেয়েছে তার নিখুঁত রিফ্লেক্স ও পজিশনিংয়ের সামনে। ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছেন লিগ শিরোপা ও ট্রফি দে চ্যাম্পিয়নস। এছাড়াও সুযোগ রয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের।
তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন লিভারপুরের মোহাম্মদ সালাহ। মৌসুমে এখন পর্যন্ত করেছেন ৩৬ গোল এবং সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ২৪টি গোল। জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল। ইতোমধ্যে তার দল চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিয়েছে।
এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠবে ব্যালন ডি’অর, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ফাইনালের মঞ্চে যারা খেলবেন, তাদের দিকেই এখন তাকিয়ে ফুটবল বিশ্ব।
আরও পড়ুন
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত
